গ্রামগুলো অনিরাপদ

আনিসুল হক মুনঃ

করোনা ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্বের মানুষ এখন ঘরবন্দী।আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।কিন্তু সারাবিশ্ব যে ভয়াবহ পরিস্থিতি অতিক্রম করছে, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার গ্রামগুলো দেখে বোঝার কোন উপায় নেই।

শাল্লা উপজেলার সবগুলো গ্রামেই চলছে এখন বোরো ধান তুলার ব্যস্ততা।নারী-পুরুষ,যুবক-বৃদ্ধ সবাই এখন একমাত্র বোরো ফসল ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত।কিন্তু তাদের মাঝে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না কোন সামাজিক দূরত্ব।মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।নেই মাস্ক,গ্লাবস কিংবা হেন্ড সেনিটাইজার এর ব্যবহার।

তাছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২০০ এর উপরে লোক আসছে। তারা আসছে সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্তের জেলা ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে।এসব মানুষ যেমন গ্রামগুলোকে করোনা ঝুঁকিতে ফেলছে তেমনি গ্রামের মানুষের মাঝেও রয়েছে যথেষ্ট সচেতনতার অভাব।

উপজেলা কন্ট্রোলরুমের সর্বশেষ তথ্য মতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সহ দেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৯১৩ জন লোক শাল্লায় এসেছে। আর এদের অনেকেই মানছে না কোয়ারেন্টিন।এদিকে সাধারণ মানুষ বলছে বিভিন্ন শহর থেকে প্রায় ৫০০০ মানুষ শাল্লায় এসেছে।

তবে লক্ষ্য করা যায় উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে মুসলিম অধ্যুষিত ইউনিয়ন শাল্লা ও আটগাঁও থেকে হিন্দু অধ্যুষিত ইউনিয়ন বাহাড়া এবং হবিবপুরে মানুষের মাঝে সচেতনতা বেশি।

বাহাড়া ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামে কিছু দিন আগে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ১০/১২ জান লোক আসে কিন্তু গ্রামবাসী তাদের বাড়িতে উঠতে দেয়নি। নদীর পাড়েই তাদের ঘর বেঁধে জায়গা করে দিয়েছে গ্রামের লোকেরা। তাছাড়া অন্যান্য অনেক হিন্দু গ্রাম নিজ দায়িত্বে লকডাউন রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে শাল্লা ইউনিয়নের কান্দিগাও গ্রামে ঢাকা থেকে ১৫/২০ জন লোক আসে গ্রামবাসি তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে পারেনি। কেউ কারো কথা শুনছে না।মুসলিম কোন গ্রামে লকডাউন লক্ষ্য করা যায়নি।

তাছাড়া হাওর ঘুরে দেখা গেছে,ধান কাটার শ্রমিক,ধান ভাঙ্গার শ্রমিক, ধান শুকানোর কাজে থাকা লোকজন কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।নেউ সামাজিক দূরত্ব।ব্যবহার করছেন না মাস্ক।অবসর পেলেই একে অন্যের সাথে গল্প করছেন।

হাওরে ধান তোলার কাজে ব্যস্ত কৃষক কমল চৌধুরী কথা হয় তার সাথে, তিনি বলেন আসলে ধান তোলার কাজ সকলে মিলেমিশেই করতে হয়।এখানে একা করার মত কোন কাজ নেই।আর ইচ্ছা থাকলেও কাজের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়।তবে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছি।