দিরাই’র বাউল রণেশ ঠাকুরকে পুড়ে যাওয়া ঘর নির্মাণের জন্য অনুদান দিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী

স্টাফ রিপোর্টার
দিরাই উপজেলার উজানধলের বাউল রণেশ ঠাকুরের গানের আসরঘর নির্মাণের জন্য এক লাখ টাকা অনুদান দিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী নজরুল ইসলাম। জেলার জগন্নাথপুরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম সংগীত শিল্পী আশিকের কাছে এই টাকা পাঠান। শুক্রবার বিকাল ৫ টায় শিল্পী আশিক উজানধলের বাড়িতে গিয়ে রণেশ ঠাকুরের হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের ছেলে শাহ্ নূরজালাল, সমাজকর্মী ধ্রুপদ চৌধুরী নুপুর, প্রবাসী নজরুল ইসলামের ছোট ভাই নাজমুল ইসলাম, শাহ্ আব্দুল করিম পরিষদের সভাপতি আপেল মাহমুদ, কণ্ঠশিল্পী মৃণাল বাবু ও আশিষ দাস প্রমুখ।
সংগীত শিল্পী আশিক জানান, রণেশ ঠাকুরের গানের আসর ঘর পুড়ে যাওয়ার খবর শুনে খুবই মর্মাহত হই। এই ঘটনাটি সাংস্কৃতিক অঙ্গণের জন্য খবুই বেদনার। মর্মস্পর্শি ঘটনাটি ফেইসবুকে দিয়ে প্রতিবাদ জানাই। আমার ফেইসবুক বন্ধু লন্ডন প্রবাসী নজরুল দেখে মর্মাহত হন এবং আমার সাথে যোগাযোগ করে পুড়ে যাওয়া ঘরটি নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর প্রতিশ্রুতির এক লাখ টাকা তিনি পাঠিয়েছেন, আমি কেবল এসে তুলে দিয়েছি। একই স্থানে নতুন গানের আসর ঘর করে অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চাই।
বাউল রণেশ ঠাকুর জানান, গানের প্রতি এবং বাউলদের প্রতি ভালবাসায় আমি মুগ্ধ-আনন্দিত। আমার সাহস বাড়িয়ে দিয়েছেন সকলে। এর আগে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ সহমর্মিতা ও ঘর বানানোর জন্য সহযোগিতার অর্থ ও বাদ্যযন্ত্র তুলে দেন।
গত ১৭ মে রণেশ ঠাকুরের গানের আসরঘরটি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। সাত হাত প্রস্ত ও ১৪ হাত লম্বা টিনের বেড়া ও টিনের চালার এই ঘরটিতে করোনাকালের আগেও গানের আসর করেছেন বাউল রণেশ ঠাকুর। এই ঘরটিতে কেউ না থাকলেও তাঁর কিছু বাদ্যযন্ত্র ও গানের খাতা ছিল। রণেশ ঠাকুর না বললেও স্থানীয় সাংস্কৃতিকর্মীরা বলছেন, এটি পরিকল্পিত। যারা নানা সময়ে শাহ আব্দুল করিমকে গানের চর্চায় বাধা দিয়েছে, তারাই রণেশ ঠাকুরের গানের আসরঘরে আগুন দিয়েছে।
আগুনের ঘটনায় গত ১৭ মে মঙ্গলবার রাতে দিরাই থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন রণেশ ঠাকুর। এরপর রাতেই পুলিশ উজানধল গ্রামের এলাম উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ আহমদকে (২৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।