দিরাইয়ে ব্যাংকে নগদ টাকার সংকট!! চরম বিপাকে ব্যবসায়ীরা

 

নিজস¦ প্রতিবেদক,দিশাডটকম ঃ- হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলা সদরে বোরো ধান ক্রয়-বিক্রয়ের বিশাল একটি আরৎ বাজার। অর্ধশতাধিক ধানের আরৎ রয়েছে দিরাই বাজারে। প্রতিদিন  এ বাজারে  গ্রাম্য কৃষকদের পাশাপাশি শতাধিক ফরিয়া ধান বিক্রয় করতে আসেন। দিনে গড়ে সহস্রাধিক মেট্রিক টনের বেশি ধান ক্রয়-বিক্রয় হয় এ বাজারে। যার বাজার মূল্য বর্তমানে কোটি টাকার উপরে।বাজারে চাহিদা অনুযায়ী বিশাল অংকের টাকা লেনদেন করতে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের ধারস্ত হতে হয় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু দিরাইয়ে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলো থেকে নগদ টাকা উত্তোলনে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গত তিন মাস ধরে ব্যাংক থেকে  নগদ টাকা নিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির  শিকার হচ্ছেন দিরাই বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া কোন কোন ব্যাংক ষ্টাফদের দুর্ব্যবহারের কারনে গ্রাহক ভোগান্তিরও অভিযোগ রয়েছে। ধান ক্রয়-বিক্রয়ের ভরা মৌসুমে এসব হয়রানির প্রতিকার চেয়েছে ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা যায়, দিরাই বাজারে চারটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এর মাঝে সোনালী ব্যাংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়। করোনা সংকট কালীন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ব্যাংক খুলা রাখা হলেও কোন ব্যাংকেই সেটি তেমন মানা হচ্ছেনা। এর অযুহাতে ব্যাংক ষ্টাফরা গ্রাহকদের সাথে প্রায় সময়েই দুর্ব্যবহার ও নানা হয়রানির খবর পাওয়া যায়। সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন দিরাই বাজারের ধানের আরতদারেরা। ব্যবসায়ীরা জানান, দিরাইয়ে অন্তত অর্ধশত ধানের আরৎ রয়েছে। প্রতিদিন এসব আরতে  গ্রাম্য কৃষকদের পাশাপাশি শতাধিক ফরিয়া ধান বিক্রয় করতে আসেন। দিনে গড়ে সহস্রাধিক মেট্রিক টনের বেশি ধান ক্রয় বিক্রয় হয় দিরাই বাজারে। যার বাজার মূল্য বর্তমানে কোটি টাকার উপরে।বাজারে চাহিদা অনুযায়ী বিশাল অংকের টাকা লেনদেন করতে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের ধারস্ত হতে হয় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু ব্যাংক গুলো ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো নগদ টাকা দিতে পারছেনা। ফলে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আরতদার ব্যবসায়ীদের। তাদের বেশি অভিযোগ সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক নিয়ে। ধানের আরতদার ওয়ারিছ অটো রাইসের প্রোপাইটর আল মাসুদ জানান,বিগত তিন মাস ধরে আমরা দিরাই সোনালী ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রতিদিন আমার ১০/১২ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু ৫ লাখ টাকার উপরে চেক লিখে দিলেই ব্যাংকে টাকা নাই বলে চেক ফেরত দেয়া হয়। মেসার্স ফজলুল করিম ট্রেডার্সের প্রোপাইটার ফনু মিয়া বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্টানের চাহিদানুযায়ী দিনে ২০/২৫ লাখ টাকা লেনদেন করতে হয়। কিন্তু ব্যাংকে ১০ লাখ টাকার চেক লিখে টাকা তুলতে গেলে কর্তৃপক্ষ আমাদের আর টাকা দিতে পারে না । ব্যাংকে এত টাকা নাই বলে চেকটি ফেরত পাঠিয়ে দেয়। আমরা বার বার যোগাযোগ করেও চাহিদামতো টাকা উত্তোলন করতে পারিনা। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। পরে ধার দেনা করে ধান বিক্রেতাদের টাকা দিতে হয়। একই অভিযোগ দিরাই বাজারের ব্যবসায়ী দিলোয়ার ট্রেডার্স,পরেশ তালুকদার,মেসার্স ফ্যামেলি ফেয়ার,রায়হান ট্রেডার্স, রাহাত ট্রেডার্স, যমুনা ট্রেডার্স, আশরাফ ট্রেডার্স, আরিফ অটো রাইস মিল , প্রীতিরাজ ট্রেডার্স এর মালিকসহ আরো অনেকেরই। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংক দিরাই শাখার ব্যাবস্থাপক সুমন ভট্রাচার্য বলেন সোনালী ব্যাংকে টাকার সমস্যা নেই, তবে আগের দিন ব্যাংক লেনদেন সময়ে বড় ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা  আমাদের না জানালে আমরা মোটা অংকের টাকার দিতে পারিনা। আমি ১০ দিন হয় দিরাই শাখায় আছি, আগে কি হয়েছে আমার জানা নেই।অভিযোগ স্বীকার করে কৃষি ব্যাংক দিরাই শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আব্দুল বারি বলেন,আমাদের ফান্ড সংগ্রহ করতে না পারলে বেশি টাকা দিতে কিছু সমস্যা হয়। আমরা চেষ্টা করবো আগামীতে ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো টাকা দিতে।  ধান ক্রয়-বিক্রয়ের ভরা মৌসুমে এসব হয়রানির প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন ব্যবসায়ীরা ।