পিআইসি’র সভাপতি জানে না সদস্য সচিব কে ! রহস্যজনক ভাবে পাল্টে গেলো কমিটি

নিজস্ব প্রতিনিধি-

সুনামগঞ্জের ছায়ার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে ১২৪নং প্রকল্পটি পেতে আবেদন করেন মুরাদপুর গ্রামের রন সরকার। কার্যাদেশ প্রদানের আগেই পওর-২ বিভাগের শাখা কর্মকর্তা সমসের আলী’র মৌখিক নির্দেশে কাজ শুরুও করে তিনি। এরইমধ্যে তিনি ওই প্রকল্পে ৩লক্ষ টাকার মাটির কাজও করেন। পরে ব্যাংক একাউন্ট করতে এসে জানতে পারেন ওই পিআইসি’তে তার নাম নেই। রহস্যজনক ভাবে পাল্টে যায় পিআইসি। তার বদলে ওই পিআইসি’তে স্থান পায় স্থানীয় প্রভাবশালী সাংবাদিক পি.সি. দাশ (পীযুষ) এর ভগ্নিপতি জন্টু সরকার। রন সরকারের অভিযোগ শাখা কর্মকর্তা সমসের ও সাংবাদিক পীযুষই এ কাজটি করেছে।
জানা যায়, খালিয়াজুুড়ি উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের রন সরকারকে প্রথমে প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করে সমসের আলী মন্টু বাঁধের কাজ করতে বললে তিনি কাজ শুরু করেন। বাঁধের কাজে প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হলেও পরবর্তীতে তাকে পিআইসি থেকে বাতিল করে ওই গ্রামের রঞ্জন সরকারকে সভাপতি ও জন্টু সরকারকে সদস্য সচিব করা হয়। রহস্যজনক ভাবে কমিটি বদল করায় একদিকে প্রকল্পের কাজ আটকে আছে।
সরজমিনে দেখা যায়, ছায়ার হাওরের ১২৪নং পিআইসি’র কাজ বন্ধ রয়েছে। পিআইসি’র কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, আমি এখনো আমার প্রকল্পের সদস্য সচিব কে জানি না। এখনো পর্যন্ত ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারি না। এ পিআইসি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। ঝামেলা মিটমাট না হওয়া পর্যন্ত প্রকল্প কাজ বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে রন সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথমে আমাকে এই পিআইসির সভাপতি করে কমিটি গঠন করে মাটি কাটার অনুমতি দেয়। আমি ব্যক্তিগত প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ করে বাঁধের কিছু অংশে কাজ করেছি। পরে ব্যাংকে একাউন্ট করতে গেলে জানতে পারি আমি কমিটিতে নাই। পরে জানতে পারি স্থানীয় সাংবাদিক পি.সি দাশ (পীযুষ) ও এসও সমসের আলী আমার আবেদনের সদস্য সচিব রঞ্জন সরকারকে সভাপতি ও সাংবাদিকের ভগ্নিপতি জন্টু সরকারকে সদস্য সচিব করে পিআইসি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে সাংবাদিক পীযুষ আমাদের এখানে এসে আমাদেরকে দাপটের সাথে বলে যায় যে, শুন আমি সাংবাদিক পি.সি দাস। আমি বলছি, তোমরা কাজ করো। কাকে কত টাকা দিতে হবে সেটা আমি দেব। আর পি.সি দাশের জন্যই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান ওই রন সরকার।
এ বিষয়ে শাল্লার সাবেক শাখা কর্মকর্তা ও উপ-সহকারি প্রকৌশলী সমসের আলী মন্টু বলেন, এই বিষয়ে আমি ইউএনও স্যারকে বলেছি। ইউএনও স্যার বলেছেন তিনিই এর সমাধান করবেন।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মুক্তাদির হোসেনের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন আমি গত বৃহস্পতিবার শাল্লায় হাওররক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেছি। তবে এই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি এখন জেনেছি, ইউএনওকে বলে দিচ্ছি এর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।