রেড জোন এলাকায় থাকছে যেসব বিধিনিষেধ

যেসব বিধিনিষেধ রেড জোনে থাকবে, তা নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে জয়েনিং সিস্টেম বিষয়ক কেন্দ্রীয় কারিগরি গ্রুপের সদস্য সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের ফাইলেরিয়াসিস এলিমিনেশন অ্যান্ড এইচ টি এইচ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. জহিরুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। রেড জোন তালিকাভুক্ত এলাকায় ১৩টি এবং দেশের সব অঞ্চলে ৬টি নিয়মাবলি পালন করতে হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাইরাস সংক্রমণের পরিমাণ বাড়ছে। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মল আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নম্বর আইন) এবং সংশ্লিষ্ট ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকারের অনুরোধক্রমে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা কোভিড-১৯ রোগের ঝুঁকি বিবেচনায় লাল, হলুদ এবং সবুজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা ও তা বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ। জনগণের ক্ষমতা আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলা সিভিল সার্জনের কাছে বিষয়টি অর্পণ করা হয়। এবং বলা হয় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় জোনিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন।

রেড জোন এলাকায় যেসব বিধিনিষেধ বহাল থাকবে-

১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত সময় কৃষিকাজ করা যাবে

২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কল-কারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে, তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে

৩. বাসা থেকেই অফিসের কাজ করতে হবে

৪. কোনো ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। কেবল অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবেন

৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবেন। রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, ট্যাক্সি বা

নিজস্ব গাড়ি চলাচল করবে না

৬. সড়কপথ, নদীপথ ও রেলপথে জোনের ভেতরে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না

৭. রেড জোনের ভেতর ও বাইরে মালবাহী নৌযান ও জাহাজ কেবল রাতে চলাচল করতে পারবে

৮. প্রত্যেক এলাকায় সীমিত পরিমাণে প্রবেশ ও বহিরাগমন পয়েন্ট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

৯. রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত মুদি ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্টের খাবার দোকানে কেবলমাত্র হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে। বাজারে শুধু প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিংমল সিনেমা হল জিম স্পোর্টস কমপ্লেক্স বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

১০. আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল এটিএমের মাধ্যমে করা যাবে। তবে সীমিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে

১১. এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করা হবে। শনাক্ত রোগীরা হোম আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন থাকবে

১২. শুধু মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মসজিদ/উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব রেখেই ইবাদত করতে পারবেন

১৩. সাধারণভাবে রেড জোন ২১ দিনের জন্য বলবৎ থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে রেড জোন পরিবর্তন করা হবে।

এছাড়া রেড জোনসহ বাংলাদেশের সব অঞ্চলে নিম্নোক্ত সাধারণ নিয়মাবলি পালন করতে হবে-

১. সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণ, পরিষ্কার-পরিছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে

২. করোনা রোগ/সংক্রমণ শনাক্তকরণ, তাদের আইসোলেশন ও চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে

৩. সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে

৪. স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল ও জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। অসুস্থ ব্যক্তি পরিবহনকারী যান ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চলাচল করবে

৫. সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, কোচিং সেন্টার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে

৬. এসব কার্যক্রম তদারকির জন্য কার্যকরী সামাজিক সম্পৃক্ততা ও মাঠকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
সূত্র : সমকাল