শুক্রবার শুরু আব্দুল করিম ‘লোক উৎসব’

ডেস্ক নিউজঃ  

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে দুইদিনব্যাপী ১৫ তম ‘লোক উৎসব’। বিকাল ৩টায় শাহ আব্দুল করিম’র জন্মভূমি উজান ধল মাঠে এ লোক উৎসবের উদ্বোধন করা হবে।

বাউল সম্রাটের একমাত্র পুত্র শাহ নুরজালালের সভাপতিত্বে দু’দিনব্যাপী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, অর্থনীতিবিদ খলিকুজ্জামান, লোকজ গবেষকসহ, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখবেন।

দুদিনের অনুষ্ঠানমালায় সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর পর্যন্ত চলবে করিমগীতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশের বিখ্যাত শিল্পীবৃন্দ সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার জীবদ্দশায় ২০০৬ সাল থেকে ধল গ্রামবাসীর উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব। এটি হচ্ছে ১৫ তম লোক উৎসব।

বাউল সম্রাট পুত্র ও উৎসব আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক শাহ নুর জালাল জানান, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের অতিথিরা বাউল সম্রাটের জীবন নিয়ে আলোচনা ও দেশের বিখ্যাত শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তবৃন্দ এসে পৌঁছে গেছেন।

১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামের দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় শাহ আবদুল করিমের।পিতা ইব্রাহিম আলী মাতা নাইয়রজান বিবির অভাবের সংসারে লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি বেছে নিতে হয় রাখালের কাজ। মাত্র সাতদিন নৈশ বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁর।

প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষিত না হলেও পার্থিব স্বশিক্ষায় শিক্ষিত দার্শনিক ছিলেন তিনি। তাঁর লিখায় ও সুরে ফুটে উঠেছে সমাজ ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক বৈষম্যে শান্তির বিধান। আছে শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের কথা। একুশের চেতনায় উজ্জীবিত বিদ্রোহী এক মানব, একুশে পদক প্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম। গন-মানুষের পক্ষে তার দর্শন, চিন্তা ও চেতনা, গানে-সুরে আজীবন গেয়ে গেছেন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’ যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ৫৭’র কাগমারী সম্মেলন, ৬৯’র গণ আন্দোলন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’র গণ অভ্যুত্থানসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই তিনি গানকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়েছেন।

দিরাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এম নজরুল জানান, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে দু’দিন লোক উৎসবে সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিং করা হবে।