শাল্লায় ফসলরক্ষা বাঁধের বেহাল দশা ।। শঙ্কায় কৃষক 

শাল্লা প্রতিনিধি- 
সুনামগঞ্জের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রথম দফায় বেধে দেওয়া নির্ধারিত সময় শেষ হবে ২৮ ফেব্রুয়ারী কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবেনা এমন কথা মাথায় রেখে ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।কিন্তু দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানোর পরও কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে  শঙ্কায় হাওরপাড়ের কৃষক।
এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে  কাজ শেষ করতে তাড়াহুড়া করে কাজ করছে পিআইসির লোকজন।এর ফলে কোন রকম দায়সাড়া কাজ করেই বিল উত্তোলনের চিন্তা করছে পিআইসির সদস্যরা ।তার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করে নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ করছেন।ঠিক মত করা হচ্ছে কম্পেকশন,স্লোপের কাজ।
উপজেলার ছায়ার হাওর উপ-প্রকল্পের অধিনে পার্শ্ববর্তী খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ও ইটনা উপজেলার ধনপুর ইউনিয়ন এলাকার সবকটি বাঁধের কাজই একবারে নাজুক।এসব বাঁধের  কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এলাকাবাসি।
সোমবার ২২ ফেব্রুয়ারী কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কল্যানপুর বাজার সংলগ্ন ১৫৩নং পিআইসি’তে গিয়ে দেখা যায় কোন প্রকার কম্পেকশন ও দুরমুজ না করে বাঁধেে মাটি ফেলানো হচ্ছ।      মেলেনি পিআইসির সদস্যদের। হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক বাঁধে কাজ করছেন। মানা হচ্ছেনা নির্ধারিত প্ল্যান ও ডিজাইন।
১৪৮নং পিআইসি’তে গিয়েও দেখা যায় একই অবস্থা। এখানেও মানা হচ্ছেনা বাঁধ নির্মাণের নীতিমালা। ওই বাঁধ এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্যামপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান ১৪৮ ও ১৪৭ নং পিআইসি দু’টি কোনো প্রয়োজনই ছিলনা। এদিক দিয়ে কোনো বছরই হাওরে পানি ঢুকেনা। কেন সরকারের টাকা খরচ করা হচ্ছে আমরা জানি না। বাঁধটির প্রয়োজন নেই বিষয়ে জানতে চাইলে ১৪৮নং পিআইসির সদস্য সচিব শতদয় সরকার বাদল বলেন, আমরা জানি না প্রয়োজন আছে কি না ? পানি উন্নয়ন বোর্ড এদিকে বাঁধ দিতে বলেছে আমরা বাঁধ করছি। এতে সরকারের টাকার কি হলো তা আমরা জানি না।
তাছাড়া ওই এলাকার সবকটি বাঁধ ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ বাঁধেই বালি মাটি দেয়া হচ্ছে। বাঁধে নেই কোনো প্রোফাইল, শ্রমিকরা হালকা হালকা বাঁশের টুকরো ও কাটের ছটি দিয়ে মাটি কম্পেকশনের কাজ করছে। যা সামান্য বৃষ্টি হলেই ধ্বসে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাছাড়া ইটনা উপজেলার ধনপুর ইউনিয়ন এলাকার ১৩৮নং বাঁধে গিয়ে দেখা মিলেনি পিআইসি’র সদস্যদের। নিয়োজিত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পিআইসি’র লোকজন বাঁধে আসেনি। তারা বাড়িতেই থাকে। আমার সারাদিন কাজ করি। বাঁধটি কাদা ও বালি মাটি দিয়ে করা হচ্ছে।
১৩০ এব১৩১ নং পিআইসি সম্পূর্ণ বালি মাটি দিয়ে করা হচ্ছে। আর স্লোপ থেকে পুরোনো মাটি সরিয়ে নতুন মাটি বের করে স্টোপ করা হচ্ছে।সংশ্লিষ্ট পিাআইসির লোকজন জানান আশেপাশে ভালো মাটি না থাকায় এই বালু মাটি ব্যাবহার করা হচ্ছে।ফলে দুটি বাঁধই খুব ঝুকিতে রয়েছে।
শুধু তাই নয়, কৃষ্ণপুর ও ধনপুর ইউনিয়ন দু’টির বাঁধে বাঁধে ঘুরে দেখা মেলেনি কোনো তদারকি কর্মকর্তার। এবিষয়ে এলাকাবাসি জানান, এবছর পিআইসিরা যেভাবে কাজ করছে, তাতে আমাদের ফসলের কি হবে জানি না। তারা আরও জানায় যে, যদি অকাল বন্যায় তাদের ফসল তলিয়ে যায় তাহলে এর দায় সংশ্লিষ্ট পওর বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনকেই নিতে হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
এবিষয়ে দিরাই পওর-২ বিভাগের শাল্লা উপজেলা শাল্লা কর্মকর্তা ও উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল কাইয়ূম জানান, বার বার পিআইসি’দের তাগিদ দেয়া হচ্ছে বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য। আশা করা যাচ্ছে আগামি ৪/৫ দিনের মধ্যেই বাঁধে কাজ শেষ হবে। এরপরও তদারকি টীম বাঁধের কাজ পরির্দশনে আছেন।