শাল্লায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ফি আদায় ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ডেস্ক নিউজ: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার চাকুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎফল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত ফি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ২৫ নভেম্বর ছাত্র অভিভাবকদের পক্ষে লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য চাকুয়া গ্রামের কৌশিক রঞ্জন দাস। অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, সরকারি হিসেবে মানবিক শাখায় প্রতিজন শিক্ষার্থীর এসএসসি’র ফরম ফিস এবং কেন্দ্র ফিসসহ ১ হাজার ৪৪৫ টাকা নির্ধারিত। কিন্তু প্রধান শিক্ষক উৎফল চন্দ্র দাস মানবিক শাখার প্রতিজন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ২ হাজার ২০০টাকা হারে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৭৭৫টাকা অতিরিক্ত ফি নিয়েছেন। ‘সততা ষ্টোর’ এর সরকারি বরাদ্দের ৩০হাজার টাকা উত্তোলন করে কাজ না করে পুরো টাকাই আত্মসাত করেন প্রধান শিক্ষক। এছাড়া জনস্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃৃক ২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত টয়লেটটি এক বছরের মাথায় ভেঙে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির কারনে নিম্নমানের কাজ করে টাকা হাতিয়ে নেন। যার ফলে নির্মাণের একবছরের মাথায় তা ভেঙ্গে পড়ে। সরেজমিন গেলে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের কোন স্যনিটেশনের ব্যবস্থা নেই, সততা ষ্টোরের কক্ষে কোন উপকরন নেই, রয়েছে আবর্জনার স্তুপ, ভেতরে চুলা জ্বালিয়ে চা তৈরী করছেন পিয়ন। প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না পেয়ে কথা হয় সহকারি শিক্ষক অমিত চক্রবর্তির সাথে। তিনি বলেন, এবার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬ জন, নির্ধারিত ফিস ১৪৪৫টাকা তবে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২২০০টাকা নেয়া হচ্ছে, কেন নেয়া হচ্ছে প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। সততা ষ্টোরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বিদ্যালয়ের দফতরি এর দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে মোবাইন ফোনে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বোর্ড নির্ধারিত ফি, কেন্দ্র ফি ও আনুসাঙ্গিক খরছসহ ২২০০টাকা করে নেয়া হচ্ছে, সততা ষ্টোরের কাজ করা হয়েছে, কোন টাকা আত্মসাত করা হয়নি, জনস্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক নির্মিত টয়লেটের ব্যাপারে আগের সভাপতি বলতে পারবেন, রড না দেয়ায় তা ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানান তিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি সুনীল চন্দ্র দাস বলেন, প্রধান শিক্ষক শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে আসছেন, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির কারনে এক বছরের মাথায় নির্মিত টয়লেটটি ভেঙ্গে পড়ে, সততা স্টোরের কোন কাজ না করে পুরো টাকাই প্রধান শিক্ষক উৎপল দাস আত্মসাত করেছেন, জানতে চাইলে হিসাব দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে তিনি জানান। চাকুয়া মহেশপুর গ্রামের অভিভাবক অধীর রঞ্জন দাস জানান, আমাদের এলাকার অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে, বোর্ড নির্ধারিত ফি দেয়ার ক্ষমতা নেই অনেকের কিন্তু অতিরিক্ত ফি আদায় দু:খজনক ও কষ্টদায়ক, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি, এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিবরণী দেখতে দেননি প্রধান শিক্ষক, ফলাফল নিয়ে প্রধান শিক্ষকের লুকোচুরি মেনে নেয়া নেয়া যায় না। এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মুক্তাদির বলেন, আজ বুধবার অভিযোগটি আমি দেখেছি, তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।