অতিরিক্ত যাত্রী, প্রতিবাদ করায় প্রবাসীকে নদীতে ফেলে দিলেন মাঝি!

চট্টগ্রামের কুমিরা ঘাট থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার জন্য নৌকায় ওঠা দুই প্রবাসীসহ চারজনকে পিটিয়ে নদীতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া নিয়ে বিতণ্ডার জেরে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে সন্দ্বীপ অনলাইন ও স্যোসাল এক্টিভিস্টদের জরুরি সভা হয়।

হামলার শিকার চার যাত্রী হলেন- মো. মানিক, মো. সোহেল, মো. শিবলু ও মো. শিহাদ। তারা সবাই মুছাপুরের আলীমিয়ার বাজার এলাকার মান্দিরগো বাড়ির বাসিন্দা এবং সম্পর্কে আত্মীয়। দুই প্রবাসী সোহেল ও শিবলু চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ctg

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই প্রবাসী সোহেল ও শিবলু পরিবারসহ চট্টগ্রামের কুমিরা ঘাট থেকে সার্ভিস বোটে করে সন্দ্বীপ যাচ্ছিলেন। সন্দ্বীপের কূলে আসার পর ভাটার কারণে সার্ভিস বোট থেকে যাত্রীদের কূলে নামানোর জন্য আসা নৌকায় ওঠাচ্ছিল। অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানোয় সোহেল সেই নৌকায় ওঠতে অস্বীকৃতি জানান। নৌকার চালক ও স্টাফরা তাকে নামতে জোর জবরদস্তি শুরু করে। সোহেল অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে নামতে অস্বীকৃতি জানালে স্টাফদের একজন সোহেলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। নৌকার চালক ও স্টাফদের গালির প্রতিবাদ করার পর সোহেলকে ধাক্কা দিয়ে সার্ভিস বোট থেকে নৌকায় ফেলে দেন। পরে সেখান থেকে ঘটনার সূত্রপাত শুরু হয়। এরপর তাকে বেধড়ক পেটানো হয়।

সোহেলকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার বাবা ও ছোট দুই ভাইকেও মারধর করে ঘাট ইজারাদারের লোকজন। এ সময় সার্ভিস বোটে থাকা যাত্রীরা বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ইজারাদারের লোকজন নৌকা চালিয়ে সার্ভিস বোট থেকে দূরে সরে যান। সেখানে ওই অবস্থায় আরেক দফা মারধর করে। পরে কূলের কাছাকাছি এলে একজন কর্মচারী প্রবাসী সোহলকে লাথি দিয়ে নদীতে ফেলে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আরাফাত রহমান সাব্বির জানান, হঠাৎ করেই দেখি ঘাটের লোকজন মিলে নৌকা ফেলে একজনকে মারছে। ওই লোককে বাঁচাতে ২-৩ জন সার্ভিস বোট থেকে লাফিয়ে নৌকায় নামেন। সঙ্গে সঙ্গে তারা নৌকাটা সার্ভিস বোটের কাছ থেকে সরিয়ে নেন। কিছুদূর নিয়ে গিয়ে নৌকা থামিয়ে নদীর মাঝখানে তাদের আবার পেটানো হয়। পরে কূলে নিয়ে লাথি মেরে বোট থেকে ফেলে দেয় কয়েকজনকে।

ctg

হামলার শিকার দুবাই প্রবাসী সোহেল জানান, একটি নৌকায় ৬০ জনের বেশি যাত্রী নেয়ায় আমি উঠতে রাজি হইনি। এ জন্য ওরা আমাকে ও আমার ভাইদের মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে।

এ ঘটনায় কুমিরা গুপ্তছড়া ঘাটের ইজারাদার এস এম আনোয়ার হোসেন দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. শরিফুল আলম বলেন, গুপ্তছড়া ঘাটে যাত্রীদের ওপর হামলার একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।