টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণ : মামলার রায়ে ক্ষতিপূরণ পাবে বাংলাদেশ

দিশা ডেস্ক ::

২০০৫ সালে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ট্যাংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রে বিস্ফোরণের মামলায় হেরে গেছে কানাডার বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি নাইকো। বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ আদালত।
বিস্ফোরণের ঘটনায় নাইকো বাংলাদেশের আদালতের রায় না মানায় ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ আদালতে যায় বাংলাদেশ। সম্প্রতি এ বিষয়ে রায় দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার সেটলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট-ইকসিড।
চুক্তি ভঙ্গ করে অতিরিক্ত গ্যাস উত্তোলন করায় বিষ্ফোরণ হয়েছে, এমন প্রমাণ মেলায় কোম্পানিকে দায়ী করে বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে শুনানিতে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ হবে।
বাংলাদেশের প্রায় ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। রোববার সংবাদ সম্মেলনে আদালতের রায় নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে পরপর দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে। এ বিস্ফোরণের জন্য ক্ষেত্রটির ইজারাদার ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কানাডার কোম্পানি নাইকো রিসোর্সকে দায়ী করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ সরকার ও বাপেক্সের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।
এই মামলা ছাড়াও নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় আরেকটি মামলা করেন দুদক। ওই চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
১৯৫৯ সালে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রটির প্রাক্কলিত মজুদ ৪৭৪ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাস থেকে উত্তোলন করা হয়েছে মাত্র ২৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ঘনফুট। এতে এখনও উত্তোলনযোগ্য ৪৪৭ বিসিএফ ঘনফুট গ্যাস থাকার কথা। কিন্তু বিস্ফোরণের সময় ও পরে ক্ষেত্রটিতে বিপুল পরিমাণ গ্যাস পুড়ে যাওয়ায় এবং উদগিরণের ফলে এই গ্যাসক্ষেত্রে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস নেই বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে ওই এলাকার পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও কৃষিক্ষেত্র দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির শিকার হয়েছে।