দিরাই’র হুরামন্দিরা হাওরে কৃষকের মাতম,তলিয়ে গেছে ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান

 

ইমরান হোসাইন, দিরাই থেকেঃ– একের পর এক হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের সোনালী ফসল। হাওরবাসীর সারা বছরের খোঁড়াক একমাত্র ফসল এই বোরোধান। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে অকাল বন্যা আর হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামতে নিয়োজিত সরকারি দলের পিআইসি সিন্ডিকেটের কারনে এবছর ঘরে উঠছে না কৃষকদের কষ্টার্জিত সোনালি ফসল। বিভিন্ন দপ্তরের তদন্তে এ পর্যন্ত প্রমানিত হয়েছে বাঁধ মেরামতের কাজে বড় ধরনের অনিয়ম দূর্নীতি হয়েছে।দুদিন আগে সরকারের কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক চাপতির হাওর পরিদর্শন করেছেন। তিনিও বলেছেন অনিয়ম দূর্নীতির বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন।
চাপতির হাওরের ধান তলিয়ে যাওয়ার পর একই এলাকায় হুরামন্দিরা হাওরের ধান নিয়ে কিছুটা আশাবাদী ছিলেন জগদল ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের কৃষক। কিন্তু তাদের আশা গুরে বালি হয়ে রোববার রাতে হুরামন্দিরা হাওরের ফসল তলিয়ে যায়। কৃষকদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, চোখের সামনে ঝলমল করা হাওর ভরা সোনালী ধান বাতাসে দোল না খেয়ে ধীরে ধীরে অথৈজলের সাথে টলটলে খেলা করছে। সারা বছরের খাদ্যসহ সংসার চালানোর অবলম্বন এভাবে তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য অবলোকন তাদের জন্য খুবই কষ্টের বিষয়। হাওর পারের প্রতিটি কৃষক পরিবারের মাতম আল্লাহ ছাড়া যেন আর দেখার কেউ নেই।কৃষকদের অভিযোগ প্রতি বছর হাওর রক্ষা বাঁধ মেরামতের নিয়োজিত সরকারি দলের পিআইসি সিন্ডিকেট কারণে তাদের সোনার ফসল তলিয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায় রোববার রাতে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়ন হুরামন্দির হাওরে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাওয়া জমি থেকে ধান তোলার কাজে দিনভর শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষক পরিবারের লোকেরা ।
হুরামন্দির হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৩ হাজারের বেশি হেক্টর জমির আধা পাকা ধান, এমনটাই দাবি হাওর পাড়ের বাসিন্দা জনপ্রতিনিধি ও কৃষক পরিবারের। তবে পাউবোর আর কৃষি অফিসের লোকজন বলছে হুরামন্দিরা হাওরের ধান ইতিমধ্যেই ৫০ ভাগ কাটা হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম আছে। যদিও এই তথ্যের কোন বাস্তবতা নেই বলে মনে করেন কৃষকরা।তারা বলছেন হাওরের ধান এখন আধা পাকা রয়েছে।
জানা যায়, গত ১৫ দিন ধরে হুরামন্দিরা হাওরের বিভিন্ন বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছিলেন স্থানীয় কৃষক, জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা। কিন্তু রোববার রাত সাতটার পর দিরাই উপজেলার হুরামন্দির হাওর প্রকল্পের সাতবিলা রেগুলেটর সংলগ্ন ৪২ নং পিআইসি’র বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকতে থাকে। এলাকার লোকজন বলছেন, হুরামন্দিরায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রয়েছে। হুরামন্দিরা হাওরে মাত্র ৩০ শতাংশ ধান কাটা হইতে পারে ।