ব্যতিক্রমী বিবাহ বার্ষিকী পালন করলেন শিক্ষক সুব্রত কুমার দাশ 

নিজস্ব প্রতিনিধি-

মনুষত্ব ও মানবিকতা মানুষের মৌলিক ধর্ম। আর মানবিকতা ও কল্যাণকর কাজের মধ্যেই চিরকাল বেঁচে থাকেন মানুষ। এমনই মানবিকতা ও কল্যাণকর কাজে এগিয়ে এলেন সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার শিক্ষক সুব্রত কুমার দাশ। তিনি বিবাহিত জীবণে সত্যিই একজন সাদামাটা প্রকৃতির লোক। স্বল্প আয়ের মধ্যেই চলছে তার জীবন-যাপন। তবুও প্রতিটি বিবাহ বার্ষিকীতে তিনি তার স্ত্রীকে নুন্যতম উপহার স্বরূপ একটি শাড়ী হলেও দিয়ে আসছেন এপর্যন্ত।
এবছর বৈশ্বিক করোনা মহামারি প্রকোপে নি¤œ আয়ের লোকজন বিপাকে পড়েছেন দেখে শিক্ষক সুব্রত কুমার দাশ আজ সোমবার ২ নভেম্বর বিবাহ বার্ষিকী পালন করেন অন্য রকম ভাবে। শাল্লা উপজেলা সদরের পাশে কলাকান্দি গ্রামটি অবস্থিত। আর সেই গ্রামের বসবাস করেন দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন। যাদের পেশা পূঁজা, বিবাহ, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র বাজানো। কিন্তু এবছর করোনার কারণে ওইগ্রামের পেশাদার বাদ্যকরগণ বিবাহসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজের সুযোগ না পাওয়ায় তারা আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তাই শিক্ষক সুব্রত কুমার দাস ওইসব কর্মহীন লোকদের কথা চিন্তা করে তিনি তার স্ত্রীকে বিবাহ বার্ষিকীতে কোনোরূপ উপহার না দিয়ে কলাকান্দি গ্রামের নিতান্ত দরিদ্র ১০টি পরিবারের মধ্যে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করেন। তিনি প্রতিটি পরিবারকে ৫কেজি চাল, ১কেজি তেল, ১কেজি ডাল, ১কেজি লবণ, ১কেজি পেয়াজ, ১কেজি আলু ও ১টি স্যান্ডেলিনা সাবান উপহার হিসেবে প্রদান করেন।
তিনি উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের সুখলাইন গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বারীন্দ্র কুমার দাশ ও যমুনা বালা চৌধুরীর প্রথম পুত্র। বর্তমানে তিনি প্রতাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে শিক্ষক সুব্রতকুমার দাশের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এবছরের করোনা পরিস্থিতির কারণে কলাকান্দি গ্রামের দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন সত্যিই কর্মহীন হয়ে পড়ে। বিষয়টি আমি আমার স্ত্রীকে জানালে সেও তা সানন্দে রাজি হয়। তাই আমি এবং আমার স্ত্রী আলোচনা করেই আমাদের বিবাহ বার্ষিকীতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করি। মূলত: আমার সামর্থ অনুযায়ী কর্মহীন লোকজনকে নুন্যতম মানবিক সহযোগিতা করতে পেরে আমি আমার জীবণে সবচেয়ে বেশী তৃপ্তি পেয়েছি।