সংবাদ প্রকাশের পর দিরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সমাজচ্যুতির আদেশ প্রত্যাহার, চেয়ারম্যানের দুঃখ প্রকাশ

দিরাই প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সমাজচ্যুত করলেন চেয়ারম্যান, মানবেতর জীবনযাপন’ শিরোনামে দৈনিক জালালাবাদে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশে নড়েচড়ে উঠে উপজেলা ও থানা প্রশাসন। দিরাই উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড তীব্র প্রতিবাদ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। এরপর দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা অফিসার ইনচার্জ এর মধ্যস্থতায় এক সমঝোতা বৈঠকে সমাজচ্যুতি করার অমানবিক আদেশটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় স্থানীয় এলাকাবাসী। শুক্রবার সকাল ১১ টায় দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জানা যায়, গত সোমবার বিকালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র কুমার তালুকদার এর উপস্থিতিতে সামাজিক বিচারের এক রায়ে নোয়াগাও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সহদেব দাসের পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়। ছেলের লঘু অপরাধের গুরুদন্ড মাথায় নিয়ে পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করে। পাঁচ হাজার টাকা উল্টো জরিমানার ভয়ে গ্রামের নিকটাত্মীয় কেউ যোগাযোগ করতোনা ঐ পরিবারের সাথে। গ্রামের সালিসি বৈঠকে সমাজচ্যুতির এ রায়টি নিয়ে দৈনিক জালালাবাদে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে প্রশাসনের গোচরিভ‚ত হয়। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আদেশে দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন ও দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম ভুক্তভোগী পরিবার ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুরোধে শুক্রবার সকাল ১১ টায় উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠক হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন, দিরাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতাউর রহমান, রফিনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র কুমার তালুকদার, দিরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতা ও রফিনগর ইউনিয়ন বিভিন্ন গ্রামের গন্যমান্য বক্তিবর্গ। দীর্ঘ আলোচনা শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অমানবিক আদেশের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র কুমার তালুকদার দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপর সাথে সাথে আদেশটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।