সময় টিভিতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর, নৌ-দূর্ঘটনা এড়াতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক দিশা ডটকম ঃ- হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর কাছে বর্ষাকাল মানেই আতঙ্ক। এসময় হাওর এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র অবলম্বন নৌযান। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কমপক্ষে ২ হাজার যাত্রীবাহী নৌযান রয়েছে। তাছাড়া সুনামগঞ্জের বালু মহাল থেকে নদী পথেছোট বড় কয়েকশ বালু বাহী ব্লাকহেড ও বালু বোঝাই নৌকা দেশের নানা জায়গায় চলাচল করে। ফিটনেস বিহীন নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে বাধ্য হয়ে এক জায়গায় থেকে আরেক জায়গায় চলাচল করেন হাওর পারের বাসিন্দারা। নিয়ন্ত্রনহীন ব্লাকহেড ও বালু বোঝাই নৌকার সাথে ধাক্কা লেগে অথবা আবহাওয়া জনিত কারনে প্রতিবছর ঘটছে নৌ-দূর্ঘটনা। বছরের পর বছর ঘটছে প্রাণহানী। কিন্তু এসব দেখার যেন কেউ নেই। সরেজমিন থেকে এসব অনিয়মের চিত্র নিয়ে গেল দুই-তিন ধরে জনপ্রিয় চ্যানেল সময় টেলিভিশনে ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরামুল কবির। চ্যানেলটির ক্যামেরা পার্সন নওশাদ আহমেদ চৌধুরী ও সাংবাদিক ইমরান হোসাইনের সহযোগীতায় বর্ষায় নৌকা চলাচলের বাস্তব চিত্র নিয়ে সাড়াজাগানো প্রতিবেদনে নৌ-দূর্ঘটনা থেকে বাচঁতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন হাওরবাসী। এরপরই নড়েচড়ে উঠেন জেলা প্রশাসন। সুনামগঞ্জে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪ দফা নির্দেশনা দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জ জেলাধীন নৌপথে চলাচলকারী নৌযানসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট সর্বসাধারণকে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে প্রচলিত আইন ও বিধি বিধানসহ নিম্নলিখিত নির্দেশাবলী মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।অভ্যন্তরীণ নৌযানসমূহকে সার্ভে এবং নিবন্ধন করতে হবে। সার্ভে সার্টিফিকেট (ফিটনেস) নৌযানের প্রকাশ্য স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। নিবন্ধন সনদপত্র নৌযানে রাখতে হবে। রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রকাশ্য স্থানে উৎকীর্ণ থাকবে। প্রতিটি নৌযানে আসন সংখ্যা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইফ জ্যাকেট/ভয়া যাত্রী সাধারণের হাতের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে। আসন সংখ্যার চেয়ে অধিক যাত্রী বহন করা যাবে না। দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক এবং সহকারী দ্বারা নৌযান চালনা নিশ্চিত করতে হবে। সাইরেন ও সার্চ লাইট/সিগনাল লাইট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। মালবাহী নৌযানে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত মালামাল পরিবহন করা যাবেনা। নৌযান চালকের দক্ষতা, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার সনদ গ্রহণ করতে এবং তা নৌযান চালনাকালে সংরক্ষণ করতে হবে। আবহাওয়া পূর্বাভাস মেনে নৌযান চালনা করতে হবে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌযান চালনা হতে বিরত থাকতে হবে। সকল প্রকার সংঘর্ষ ও দুর্ঘটনা এড়িয়ে নৌযান চালনা করতে হবে। কোনভাবেই ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী/মালামাল বা পণ্য পরিবহন করা যাবেনা।
এসকল নির্দেশনা অমান্য করলে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ ও বাংলাদেশ বাণিজ্যিক নৌ-চলাচল অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এবং প্রচলিত আইন ও বিধি মোতাবেক মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও এতদ্সংক্রান্ত বিধি বিধান ও সরকার কর্তৃক জারীকৃত অন্যান্য আদেশ-নির্দেশ মেনে নৌযান পরিচালনা করতে হবে।জনস্বার্থে এ নির্দেশাবলী সংশ্লিষ্ট সকলকে মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।