সাঙ্গ হলো দু’দিন ব্যাপী শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব

ইমরান হোসাইন (দিরাই উজানধল থেকে):

শাহ আবদুল করিম বাউল সম্রাটের পথিকৃত। যার স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক পেয়েছিলেন তিনি। এই গুনী শিল্পীকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে স্মরণীয়-বরনীয় করে রাখতে করিম লোক উৎসবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। শাহ্ আব্দুল করিমের ব্যক্তিত্ব মহান। তাকে নিয়ে হয়তো অনেকে বানিজ্য করেছেন, কিন্তু তিনি নিজেকে বিক্রি করেন নাই। এজন্যেই শাহ আব্দুল করিম বাউল সম্রাট উপাধি পেয়েছেন। জ্ঞানী গুণী সবাই বলেন মুক্তি আসে মানবতায়,/ মানবতা বিনেরে- মন, ধর্ম-কর্ম বিফলে যায়।’ শাহ আবদুল করিম রচিত এ প্রতিপাদ্য নিয়ে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপি শাহ অবদুল করিম লোক উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে।শাহ আবদুল করিম পরিষদ ও ধল গ্রামবাসীর আয়োজনে এবং সানোয়ারা গ্রুপ ড্রিংস এন্ড বেভারেজ ইন্ডা. লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় বাউল সম্রাটের নিজ জন্মভূমি উজান ধলের সবুজ মাঠে শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় এ লোক উৎসবের উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ (চেয়ারম্যান পি কে এস এফ)।করিমপুত্র শাহ নুর জালালের সভাপতিত্বে শাহ আবদুল করিমের জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ।বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, একুশে পদক প্রাপ্ত সুষমা দাস, ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন. মো. আবদুল কাদের, সানোয়ারা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান, ড. জাহেদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান মোহন চৌধুরী ।প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, শাহ আবদুল করিমের আদর্শ থেকে আমরা বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছি। তিনি আজন্ম মানবতার কল্যাণে কাজ করে গেছেন, গেয়েছেন মানুষের জয়গান। আমাদেরকেও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। মানবতার কল্যাণই সমাজ ও রাষ্ট্রকে কল্যাণমুখী করে তুলতে পারে। বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার জীবদ্দশায় ২০০৬ সাল থেকে ধল গ্রামবাসীর উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় শাহ আব্দুল করিম লোক উৎসব। এরই ধারাবাহিকতায় এটি হচ্ছে ১৫তম লোক উৎসব।আলোচনা শেষে সন্ধ্যার পরপরই শুরু হয় গানের অনুষ্ঠান করিমগীতি। এতে গান পরিবেশন করেন, অতিথি ও স্থানীয় বাউল শিল্পীবৃন্দ। এদিকে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফি উল্লাহর সভাপতিত্বে সমাপনী দিবসের অনুষ্টানে প্রধান অথিতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক অাব্দুল অাহাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, উপ সচিব সৈয়দ ফারুক অাহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল অাহমদ,জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহেদ অাহমদ, দিরাই প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান তালুকদার প্রমূখ ৷ প্রসঙ্গত, ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় শাহ আবদুল করিমের।