প্রতিনিধি, শাল্লাঃ
সুনামগঞ্জের দিরাই শাল্লা সড়কের দাবীতে গণস্বাক্ষর দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শাল্লাবাসী। মঙ্গলবার বেলা ১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেনের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর আগে ২৫ মে দিরাই শাল্লা সড়কের দাবীতে উপজেলা সদরে মানববন্ধন পালন করে আন্দোলনকারীরা। এ আন্দোলন থেকেই সাতদিন ব্যাপি গণস্বাক্ষর কর্মসুচির ঘোষণা দেয়া হয়। এরই ধারবাহিকতায় মঙ্গলবার এই স্মারকলিপি দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, শাল্লা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দুলদুল চৌধুরী, সাংবাদিক বাদল দাস, বকুল আহমেদ তালুকদার, শিক্ষক সুব্রত কুমার দাস খোকন, ছাত্রলীগ নেতা লিংকন রায়, সাংবাদিক শান্ত কুমার তালুকদার, দিলোয়ার হোসেন, জেসি বিশ্বাস প্রমুখ। তবে এই আন্দোলনের সাথে একমত পোষন করেছেন উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা। আন্দোলনকারী বাদল চন্দ্র দাস বলেন, দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আমাদের দিরাই শাল্লা সড়ক। স্বাধীনতার পর থেকেই এই উপজেলাটি অবহেলিত। যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন সময়ে বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ২০১১ সালে দিরাই শাল্লা সড়কের কাজ শুরু হলেও ঠিকাদারের গাফিলতি ও দুর্নীতির কারনে ২০১৭ সালে জুন মাসে এসে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে বারবার মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবনা ফেরত আসছে। তাই আমাদের শাল্লাবাসীর দাবী সঠিক পরিকল্পনা ও সঠিক প্রস্তাবনা পাঠিয়ে অতিদ্রুত রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হোক।
বকুল আহমেদ তালুকদার বলেন, দিরাই শাল্লার এমপি ড. জয়াসেন গুপ্তার দিরাই শাল্লা সড়ক নির্মাণের জন্য সংসদে একাধিকবার দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এর কোনো কর্ণপাত হয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। তারা ভুল প্রস্তাবনা পাঠিয়ে টাকা খাওয়ার ধাঁন্দা করছেন। যেখানে রাস্তার শুরু থেকেই ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে কাজও হয়েছে। আর এখন সড়ক ও জনপথ বিভাগ নতুন করে আরো ৮৫৭ কোটি টাকার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। যা মন্ত্রণালয় নাকচ করেছেন। তাই দিরাই শাল্লা সড়ক নিয়ে শাল্লাবাসীর সাথে খেলা করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন বলেন, দিরাই শাল্লা রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাদের আন্দোলনকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর আন্দোলনকারীরা স্বারকলিপি দিয়েছেন শাল্লাবাসীর পক্ষ থেকে। এই স্মারকলিপি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য: হাওড়ের বুকে মাটি ভরাট, সড়ক নির্মাণ, বিভিন্ন পয়েন্টে সেতুসহ পুরো সড়কটি পাকা করার কথা থাকলেও কাজ শেষ করতে পারেনি সওজ। কাজ অসমাপ্ত রেখে ২০১৭ সালের জুনে প্রকল্পটি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। ১২০ কোটি টাকার মধ্যে খরচ হয় প্রায় ৯৯ কোটি টাকা। অসমাপ্ত এ সড়ক এলাকাবাসীর কোনো কাজেই লাগেনি। এবার সড়কটি উন্নয়নে নতুন আরেকটি প্রকল্প নিতে চাইছে সওজ। জানা গেছে, ২০১০ সালে সুনামগঞ্জ সফরে গিয়ে দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের বছরই হাওড়ের বুকে মাটি ভরাট করে শুরু হয় সড়কটির নির্মাণকাজ। শুরু থেকেই ধীরগতিতে বাস্তবায়িত হতে থাকে প্রকল্পটি। ২০১৭ সালে যখন অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শেষ বলে ঘোষণা দেয়া হয়, তখনো মাটির কাজ ১৫ শতাংশের মতো বাকি ছিল।
admin
৫:১০ অপরাহ্ণ