সুব্রত দাস খোকনঃ শাল্লা উপজেলা সদরের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারে বিগত একমাস যাবৎ অবাধে বিক্রি হচ্ছে হাওড়ের পোনামাছ। স্থানীয় প্রশাসন, ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই এ ব্যাপারে উদাসীন।
সরজমিনে গত ২দিন ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে দেখা যায় বেলা ১টার পর থেকে মাছ বিক্রি নির্দিষ্ট স্থান ফিস সেডে না বসে খাদ্য গুদাম রোড, কলেজ রোড ও মাদ্রাসা রোড হয়ে বাজারে ঘুরে ঘুরে জেলেরা পলিথিনের থলেতে করে ও প্লাস্টিকের ছোট ছোট পাত্রে পোনামাছ (কালি বাউস, মৃগেল, রুই ইত্যাদি বড় মাছের পোনা) নিয়ে বাজারের বিভিন্ন রাস্তায় অবাধে বিক্রি করছে। বাজারে আসা ক্রেতারা কিছুটা সস্তার কারণে দেদারছে কিনছে ওইসব পোনামাছ।
গত বৃহস্পতি, শুক্র, রবি, সোম ও মঙ্গলবার এই পাঁচদিনে কান্দিগাঁও, ইয়ারাবাদ, দামপুর, সুলতানপুর, মেঘনাপাড়া ও রঘুনাথপুরের অন্তত ৩০ জন জেলের সাথে কথা হলে উনারা সবাই বলেন, তারা নিষিদ্ধ কোনাজাল দিয়ে হাওড়ে মাছ ধরেন। উনারা আরও বলেন, বর্তমানে হাওড়ে জাল ফেললে পোনামাছই বেশি উঠে। মাছ না বেচলে আমাদের সংসার চলবে কি করে ? সরকার যদি এই দুই মাস (জুলাই-আগষ্ট) আমাদের ভরন-পোষন দেয় আমরা হাওড়ে যাব না, মাছও মারব না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দামপুরের একজন জেলে বলেন, দুই মাস পরে পোনামাছ বড় হয়ে যাবে এবং পানিও কমতে শুরু করবে। তখন এই সমস্ত মাছ বিভিন্ন বিলে চলে যাবে, লাভ হবে বড়লোকদের (বিলের মালিক), আমাদের তো কোন লাভ হবে না। তাই এখন যা পারি পোনামাছ মারি ও বেচি।
শাল্লা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনুর রহমান বলেন, জেলেরা যাতে পোনামাছ নিধন না করে এবং হাওড়ে নিষিদ্ধ কোনা জাল ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ না মারে সে ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। গত ২৬ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে প্রায় ১০০ কেজি পোনামাছ জব্দ করে উন্মুক্ত হাওড়ে ছেড়েছেন এবং অভিযুক্ত জেলেদের দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। জুলাই ও আগষ্ট এই দুই মাস যদি হাওড়ের জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা যেত নতুবা তাদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করা যেত তাহলে হাওড়ে পোনামাছ নিধন রোধ সহজ হত। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ইউএনও স্যারের অনুমতি নিয়ে শাল্লার বিভিন্ন হাওরে পোনামাছ নিধন, কোনা জাল ও কারেন্টের জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব