ডেস্ক নিউজঃ
শাল্লা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি।
রোববার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট) মো. মমতাজ উদ্দিন এনডিসি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. ফিরোজ হাসান, হুমায়রা বিনতে রেজা, শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মোক্তাদির হোসেনসহ কর্মকর্তাগণ।
তদন্ত শেষে ওই দিন বিকালেই গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট) মো. মমতাজ উদ্দিন এনডিসি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এখনও ২০ শতাংশ কাজ বাকী রয়েছে। অথচ ২০১৮ সালে কাজ অর্ধেক বাকী রেখেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে মাধ্যমে এটির উদ্বোধন করা হয়েছে। সরকারি ব্যয় সঠিক ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে করতে হবে। যে বা যারা সরকারি অর্থের অপচয় করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবো।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শাল্লা উপজেলা সদরের গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে শাল্লা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ শুরু হয়। সিলেটের আক্তার ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রথম বছর কাজ করলেও দ্বিতীয় বছর থেকেই কাজে গাফিলতি শুরু করে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০১৮ সালে কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও কাজ অসমাপ্ত রেখেই এক বছর আগে ঠিকাদারের লোকজন সবকিছু গুটিয়ে চলে আসে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আক্তার ট্রেডার্স কাজ না করেই এই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ শেষ দেখিয়ে সিংহভাগ বিল ইতিমধ্যে উত্তোলন করে।
শাল্লা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত হলে গত বছরের শেষ দিকে বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এমরান হোসেনকে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে শাল্লা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। এই ফায়ার সার্ভিস ৪০ ভাগ নির্মাণ হওয়ার পর ৮০ ভাগ বিল ঠিকাদারকে দেওয়া হয়। স্টেশনটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়।
জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে হওয়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রদানের পর ১৫৬ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক রেজওয়ানুল হুদা সরেজমিনে দেখতে এসে বলেন, কাজটি দেখে আমারও মনে প্রশ্ন জেগেছে, এতগুলো ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ হচ্ছে, এটি কেন নির্মাণের আগেই উদ্বোধন করতে হলো।