দিরাই প্রতিনিধি : স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে মাহফুজা বেগম (২২) নামে পুলিশ কর্মকর্তার দ্বিতীয় স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। মাহফুজা বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সুলেমানপুর গ্রামে, তার স্বামী পুলিশের এসআই আমির হোসেনের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলায়। এসআই আমির হোসেন বর্তমানে কর্মরত আছেন সুনামগঞ্জের দিরাই থানায়। বৃহস্পতিবার দুুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের ভাড়া বাসায় তিনি আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাহফুজা বেগম সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে লেখাপড়া করতেন। তখন আমির হোসেন থাকতেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরে। এক পর্যায়ে তাদের দুজনের মাঝে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। বছর খানেক আগে তারা বিয়ে করেন। এরপর শহরের বাঁধনপাড়া এলাকায় একটি বাসা নিয়ে থাকতেন মাহফুজা ও আমির হোসেন। মাস তিনেক আগে মাহফুজা ও তাঁর পরিবার জানতে পারে, আমির হোসেন এর আগে আরেকটি বিয়ে করেছেন। তার সন্তানও আছে। এ নিয়ে দুজনের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয়।
মাহফুজা বেগমের মা খালেদা বেগম জানান, আমির হোসেনের পরিবার বিয়েটা মেনে নেয়নি। মাঝেমধ্যে আমির হোসেনের মা ও আগের স্ত্রী ফোন করে মাহফুজাকে গালিগালাজ করত। বুধবার রাতেও একইভাবে তাকে গালিগালাজ করে। বিষয়টি মাহফুজা আমির হোসেনকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। উল্টো আমির হোসেন মাহফুজাকে এ রাতেও মোবাইলে কল দিয়ে নানাভাবে নির্যাতন করেন। পারিবারিক অশান্তিতেই আমার মেয়েটি এ পথ ধরেছে।
এস আই আমির হোসেন জানান, স্ত্রীর সঙ্গে তার কোনো ঝামেলা ছিল না। তবে মাঝেমধ্যে রাগে সে মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলত। প্রচন্ড জেদি ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে ভিডিও কলে রেখে মাহফুজা যখন গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেখায় তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে বাসার মালিককে ফোনে বিষয়টি জানান। কিন্তু মালিক গিয়ে দরজা খুলতে পারেননি। পরে সুনামগঞ্জ সদর থানার পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে দেখে তার মরদেহ ঝুলে আছে। আমির হোসেন বলেন, ‘আমি তাকে আমার আগের বিয়ের বিষয়টি নিয়ে অনেকবার বুঝিয়েছি। তারপরও মাঝে মাঝে সে রাগ করে এভাবে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু সে সত্যিই আত্মহত্যা করে ফেলবে ভাবতেই পারিনি।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা মাহফুজার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্ত শেষে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।
দৈনিক দিরাই শাল্লা
৪:৪১ পূর্বাহ্ণ