নিজস্ব প্রতিবেদক-
সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার উপর দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টির পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। দুই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভার নিচু এলাকায় সহস্্রাধিক ঘর-বাড়ী বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানিবন্দি আছে ৫হাজারেরও বেশি পরিবার। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে দুই উপজেলার ৫০টির মতো মাছের খামার। ভেসে গেছে কোটি টাকার মাছ। লাগাতার ভারী বৃষ্টির ফলে দিন দিন বাড়ছে বানরাসিদের দূর্ভোগ।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যার কারনে দুই উপজেলায় সরকারী ছুটি বাতিল করে সবাইকে বন্যার্তদের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। দিরাই উপজেলার ২০টি ও শাল্লা উপজেলার ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। দিরাইয়ে ৩৪টি ও শাল্লায় ৭০টি বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে শাল্লার ৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৫০টি পরিবারের লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। দিরাই উপজেলার ১টি কেন্দ্রে কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিলেও সেখানে থাকা খাওয়ার কোন সুবিধা না থাকা তারা চলে গেছে। সোমবার বিকাল ৩ টায় দিরাই-শাল্লার সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা শাল্লা উপজেলার বন্যা কবলিত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বানবাসি লোকজনকে আতঙ্কিত না হয়ে সাহসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহবান জানিয়ে বলেন, বানবাসিদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ত্রাণ সামগ্রী বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। সরকার সব সময় হাওরবাসির পাশে ছিল এবং থাকবে।
দিরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম জানান দিরাইয়ে সোমবার পর্যন্ত ২৫/৩০টি মাছের খামার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর গ্রামের মাছের খামারি ফরিদ সরদার জানান আমরা কয়েকজন যুবক একটি পঞ্চায়েতি বড় জলাশয়ে মাছ চাষ করেছিলাম। বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে। আমাদের কমপক্ষে ৩০লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
দিরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী জানান, উপজেলার নিচু এলাকার প্রায় ৬শতাধিক ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বানবাসিদের জন্য দিরাইয়ে ৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন) জানান, দিন দিন বাড়ছে বানবাসি মানুষের দূর্ভোগ। উপজেলার ৪ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। আমরা ত্রান নিয়ে বন্যা কবলিতদের পাশে আছি। উপজেলা সদরের মনিটরিং সেল থেকে সার্বক্ষণিক সকল ইউনিয়নের খবর নেয়া হচ্ছে বলেও জানান উভয় উপজেলার চেয়ারম্যান।