দিশা ডেস্কঃ
আজ ১৭ মে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের এই দিনে প্রায় ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরে আসেন তিনি। এবার শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৩৯ বছর পূর্তি হচ্ছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার সময় বিদেশে অবস্থানের কারণে তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। জাতির ইতিহাসের এ বিষাদময় ঘটনার সময় বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে শেখ হাসিনা তার স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে কর্মস্থল জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে ভারত হয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।
দেশে ফেরার আগেই ১৯৮১ সালের ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ নেন তিনি। পাশাপাশি জনগণের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম শুরু করেন। তার উদ্যোগে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা দেয়। দেশবাসীও উজ্জীবিত হয় নতুন প্রেরণায়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং স্বৈরাচার ও সামরিক শাসনের অবসানের লক্ষ্যে দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে টানা আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকবার গৃহবন্দি হয়েছেন শেখ হাসিনা। ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও তিনি ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ১১ মাস বিশেষ কারাগারে কারাবন্দি ছিলেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। প্রথমবার ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন সরকার গঠন করে এ দল। দ্বিতীয়বার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও মধ্যে দিয়েও ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে তারা। তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ভূমিধস জয়ের পর ৭ জানুয়ারি সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার দিনটি উদযাপনে তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। তবে ঘরোয়াভাবে শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করে দোয়া করা হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানাবেন তাকে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দিবসটি উপলক্ষে ঘরে বসে বিশেষ দোয়া করার জন্য দল এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নির্দেশনা প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে করোনা সংকট মোকাবিলায় চলমান কর্মোদ্যোগকে আরও গতিশীল করে তার প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।