নিজস্ব প্রতিবেদক, দিশাডটকমঃ গেল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি চেয়ারম্যান হয়ে একের পর এক দূর্ঘটনার জন্ম দিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় সে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যানের হাত কেটে নেয়ার ঘোষণা দেয়। নির্বাচিত হয়ে শপথের আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলীকে অফিস কক্ষে প্রকাশ্যে মারধরের মামলার আসামী হয়ে ছিল পলাতক। উচ্চ আদালতের জামিনের পর শপথ গ্রহন করেন তিনি।চেয়ারে বসেই নিজ ইউনিয়নের সচিব ভানু রঞ্জন দাসকে লাঞ্চিত করা,কিছুদিন পরেই বাজারের এক মহিলা দর্জিকে কুপ্রস্তাব দেয় ঐ মহিলা উপজেলা নির্বাহি অফিসারের বরাবর অভিযোগ দিলে সমঝোতার মাধ্যমে শেষ হয়।
সর্বশেষ গেল বৃহস্পতিবার রাতে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে এক কিশোরীকে( ১৭)আটকে রেখে মেম্বারকে সাথে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করে কিশোরী। একের পর এক নানান অপরাধ কর্মকাণ্ডের হুতা সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিত রায় চৌধুরী নান্টু।তার প্রয়াত পিতা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা ও একই ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এলাকায় প্রচার আছে তার প্রকাশ্যে মদ্যপানের বিষয়টির । সরকারি দলের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান নান্টু রায়ের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে কিশোরীকে তুলে এনে নিজ কার্যালয়ে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হয়েছে । শাল্লা থানার মামলা নং ২/২০২২ ইং। ধর্ষণের শিকার কিশোরী নিজে বাদি হয়ে শাল্লা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চেয়ারম্যান নান্টুর সহযোগী পরিষদের মেম্বার দেবব্রত দাসসহ তিন জনকে আসামী করা হয়েছে। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের বাহাড়া গ্রামের মলয় দাসের সঙ্গে ওই কিশোরীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। এরই মধ্যে মলয় অন্যত্র বিয়ে করার প্রস্তুতি নিলে গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় ওই কিশোরী মলয়ের বাড়িতে যায়। মলয়ের অভিভাবকেরা বিষয়টি বাহাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুকে জানায়। চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী মলয়ের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি সমঝোতা করে দেওয়ার কথা বলে কিশোরীকে রাতেই উপজেলা সদরে অবস্থিত পরিষদের অফিসে নিয়ে আসেন। পরে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য দেবব্রত দাস মিলে ওই কিশোরীকে রাতভর ধর্ষণ করে। শুক্রবার সকাল ৮টায় কিশোরীটি কৌশলে দৌড়ে শাল্লা থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে কিশোরী চেয়ারম্যান নান্টুর সহযোগী পরিষদের মেম্বার দেবব্রত দাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ । রাত ১০ টায় মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন ওসি আমিনুল ইসলাম।
কিশোরীর ভাই বলেন, আমার বোনকে মলয়ের বাড়ি থেকে গত রাতে বাহাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু ও মেম্বার দেবব্রত দাস তাদের পরিষদে নিয়ে আসে। সকালে আমার বোন শাল্লা থানায় রয়েছে জানতে পেরে আমি আমার বোনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু ও মেম্বার দেবব্রত দাস দুজনে মিলে আমার বোনকে রাতভর ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুর ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ইউপি সদস্য দেবব্রত দাসের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বরটিও বন্ধ রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত মদ্যপান করা চেয়ারম্যান নান্টু রায় সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচিত হয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরার কারনে এলাকাবাসী আতংকিত থাকে। শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হাত কেটে নেয়ার হুমকির ঘটনার পর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।তার বেপরোয়া চলাফেরায় প্রশাসন রয়েছে নির্বাক। ধর্ষণের মামলার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।