দিরাইয়ে আ’লীগের সংঘর্ষ,মোশাররফ-রঞ্জনসহ ৮১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

 

দিরাই প্রতিনিধি ঃ- দুই যুগ আগে আওয়ামী লীগের সামাদ- সুরঞ্জিত গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবলীগ নেতা নিহতের মামলায় ছিলেন বাদী। সেই মামলায় যিনি ছিলেন অন্যতম বিবাদী দুই যুগ পরে দলের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনি হলেন বাদী। কাকতালীয় এ ঘটনাটি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা দিরাইয়ে টক অব দা টাউনে পরিনত হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর দিরাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিবদমান দু গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার তিন দিন পর সুনামগঞ্জের দ্রুত বিচার আদালতে মামলা হয়েছে। মোশাররফ গ্রুপের প্রধান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাবেক মেয়র মোশাররফ ও যুবলীগ সভাপতি রঞ্জনসহ ৮১ জনের নামে এ মামলাটি হয়। বৃহস্পতিবার দ্রুত বিচার আইনে আদালতে দায়ের করা নালিশা মামলার বাদী প্রদীপ রায় গ্রুপের অনুসারী কলিম উদ্দিন। মামলার প্রধান আসামি ও বাদী দিরাই পৌরসভার চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা। দলীয় সূত্রে জানা যায় ১৯৯৮ সালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস ছামাদ আজাদ ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গ্রুপের মাঝে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা নান্টু রায়। নান্টু রায় হত্যার পর মোশাররফ মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে সেই মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন সামাদ আজাদ গ্রুপের অনুসারী কলিম উদ্দিনসহ ২৭ জন । সামাদ আজাদ এর মৃত্যুর পর বিবাদমান দুটি গ্রুপ সুরঞ্জিত – মতিউর ( জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি) গ্রুপে রুপ নেয়। এ দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দিরাই উপজেলার জারলিয়া জলমহাল দখল নিয়ে সংঘর্ষ গুলিবিদ্ধ হয়ে মতিউর গ্রুপের তিন ব্যক্তি নিহত হয়। তিন খুনের মামলায় সুরঞ্জিত গ্রুপের নেতা প্রদীপ রায়, মোশাররফ মিয়া,হাফিজুর রহমান সহ ৩৯ জনকে আসামী করা হয়।
এদিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর তার অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ মিয়ার দলের নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে। বিবাদমান দুই নেতার অনুসারীরা বিগত কয়েক বছর ধরে আলাদা নির্বাচন ও দলীয় কর্মসূচি পালন করেন। সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রদীপ- মোশাররফ গ্রুপের সংঘর্ষ মঞ্চে বসা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রদীপ রায়ের অনুসারী কলিম উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৮১ জনের নামে সুনামগঞ্জ দ্রুত বিচার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন । দ্রুত বিচার মামলা নং ০৫,তারিখ ১৭-১১-২২ ইং। দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জকে মামলাটি এফ আই আর গন্যে নিয়মিত মামলা রুজু করতঃ আগামী ৩১-১১-২২ তারিখে প্রতিবেদন দিতে দ্রুত বিচার আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলাম আদেশ দেন।