নিজস্ব প্রতিবেদক দিশাডটকম ঃ- সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এলাইছ মিয়া (৫০) নানের আরেক জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেলে তার মৃত্যু হয়। নিহত এলাইছ মিয়া কালধর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদ (লেদু মিয়া) এর ছেলে। এর আগে গত রোববার ঘটনার দিন আমির উদ্দিন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। উপজেলার জগদল ইউনিয়নের কালধর গ্রামে জলমহালসহ পঞ্চায়েতি টাকা নিয়ে সংঘর্ষে ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়েছিলেন। সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় কুতুব উদ্দিন বাদি হয়ে প্রতিপক্ষ ফারুক মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৩১ জনের বিরোদ্ধে দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দিয়েছেন নিহত আমির উদ্দিনের ভাই কুতুব উদ্দিন। দিরাই থানার মামলা নং ৯, তারিখ ১৬-১২-২০১৯ইং। গুলিবিদ্ধ এলাইছ মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ চৌধুরী ফাত্তাহ জানান, ঘটনার দিন আটক বন্দুকধারী মৃত হাজী আবদুল আলীর ছেলে ফারক মিয়াকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন অকুস্থল পরিদর্শন করেন সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
দিরাই থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দিরাই উপজেলার কালধর গ্রামের জলমহালসহ পঞ্চায়েতি টাকা দীর্ঘদিন যাবত ফারুক মিয়ার কাছে জমা রাখা হয়। সম্প্রতি জমাকৃত টাকার হিসাব নিকাশ নিয়ে মরম আলী ও ফারুক মিয়ার লোকজনের মাঝে বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধ মীমাংসায় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা কয়েকদফা চেষ্টা করেন। শনিবার সন্ধায় ফারুক মিয়ার কাছে প্রতিপক্ষ মরম আলী হিসাব চাওয়ায় দুই জনের বাকবিতন্ডা হয়। এর জেরে রোববার সকাল ৭ টায় দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী সালিশরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ফারুক মিয়ার বাড়ি ঘেরাও করার চেষ্টা করনে। এ সময় বসতঘর থেকেই লাইসেন্সকৃত বন্দুক দিয়ে পর পর ৬ রাউন্ড গুলি করেন ফারুক মিয়া। গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের আমির উদ্দিন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১০জনসহ উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পার্শ্ববর্তী কলিয়ার কাপন গ্রামের দেলোয়ার ও রাজেল নামের দুইজন সালিশ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ দেলোয়ার আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এলাকাবাসীর সহযোগীতায় লাইসেন্সকৃত বন্দুকসহ ফারুক মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বন্দুকধারী ফারুক মিয়াকে বসতঘর থেকে লাইসেন্সকৃত বন্দুকসহ আটক করে। দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল বলেন কালধর গ্রামে হতাহতের মামলায় প্রধান আসামী গ্রেফতার হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।