বিপ্লব রায়ঃ
গতবছর এমন সময় পুরোদমে বৃষ্টি চলছিলো। আর এবছর এমন খটখটে রোদ মাঝে মাঝে ছিটেফোটা বৃষ্টি দেখা দিলেও তাপদাহের দাপট। তবে সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, আগামী কিছুদিন গরম আর ঝোড়ো বাতাস চলবে। গরমে মানুষের ভোগান্তি তো রয়েছেই ফসলের জন্যও এই আবহাওয়া বিপদ ডেকে আনছে। এমন আবহাওয়া চলার পর মাসের শেষদিকে আরেক বিপদের আশঙ্কা দেখছেন বন্যা আবহাওয়াবিদরা। ফলে চলতি বছরে দুই বিপদে পড়তে যাচ্ছে বোরো ধান।
একদিকে খরতাপের কারনেফসল ঝলসে যাওয়া, অন্যদিকে আগাম বন্যার আশঙ্কা। বন্যার আগে আগেই হাওরের ধান তুলে নিতে না পারলে ফসলহানির শঙ্কা রয়েছে। করোনার এই দুঃসময়ে ফসলহানি হলে তা বিপদ আরো বাড়িয়ে তুলবে। গত বছর হাওরে আগাম বন্যা হয়নি। কিন্তু এবার তা হওয়ার আশঙ্কা আছে। টানা খরতাপের কারনে নদনদী থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প আকাশে জমা হচ্ছে। তাই চলতি মাসের মধ্যে সকল ধান কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের নির্দেশনা দিচ্ছেন শাল্লার কৃষি অফিস। নয়তো আগাম বন্যায় ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে। শাল্লা কৃষি অফিসের উপ সহকারি জয়ন্ত কুমার দাস বলেন, এবছর শাল্লা উপজেলায় ২৩ হাজার হেক্টর বোরো ফসলের আবাদ করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর ফসলের ক্ষতিটা বেশি হয়েছে। গত ১৫ দিন আগে গরম বাতাস ও শীষ লেদা নামক পোকার আক্রমনে বেশিরভাগ হাওরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে আবহাওয়া অফিস থেকে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে।
তাই আমরা কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাড়াতাড়ি ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছি। তা না হলে আগাম বন্যায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে মাসের শেষের দিকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। আর নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আগাম বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এইদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম জানান, আগাম বন্যার সতর্কতা জানিয়ে তাদেরকে চিঠি দেয়া হয়েছে। হাওররক্ষা বাঁধে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা তাদেরকে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, আমরা মে মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত বাঁধের তদারকির কাজ চালিয়ে যাব।
এজন্য আমাদের মনিটরিং টিমও রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট পিআইসিদের চিঠি দিয়ে জানানো হবে নিজনিজ স্থান থেকে বাঁধের তদারকি করার জন্য। এবং আগাম বন্যা থেকে হাওর রক্ষা করার জন্য আমাদের টিম মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন বলেন, হাওরে ধান কাটার জন্য কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছি। এই সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে আনার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। আর কৃষি অফিসের কর্মীরাও মাঠে কাজ করছেন। কৃষকদেরকে দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিয়ে আসছে। না হয় আগাম বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।