দিরাই প্রতিনিধি ঃঃ-সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে ট্রিপল মার্ডার মামলার পরোয়নাভুক্ত আসামী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি উজ্জল বাহিনীর সস্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী। তিনি দিরাই প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও দৈনিক কালের কালের কন্ঠের দিরাই- শাল্লা উপজেলা প্রতিনিধি । মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচ টায় দিরাই পৌর শহরের দাউদপুর গ্রামে পুলিশের সামনেই এ হামলার ঘটনাটি ঘটে। আহত সাংবাদিককে প্রথমে দিরাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। আগে ২০১৮ সালে বেপরোয়া উজ্জল বাহিনীর হামলার শিকার হন দৈনিক নয়াদিগন্ত ও জালালাবাদ পত্রিকার দিরাই শাল্লা সংবাদদাতা ইমরান হোসাইন। এ ছাড়া তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বিগত ২১ জুলাই রাতে দিরাই বাজারে উজ্জল ও তার বাহিনীর সদস্যরা পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা যায় বলে জানান স্থানীয়রা। পুলিশ উজ্জল ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, দিরাই পৌর শহরের দাউদপুর গ্রামের হাজী আবু জাহের চৌধুরীর বাসায় তার মেয়ে সাহেরা খানম চৌধুরী ও সৎভাই জুলহাস গংদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন সাহেরা খানমের ছেলে সোহেল মিয়া তাদের দ্বীতল বাসায় বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ দিতে গেলে সৎ মামা জুলহাস ও তার লোকজন চড়াও হয়ে উঠে এবং হুমকি ধামকি দেয়। এরপর সোহেলের বোন দিলারা খাতুন পরিস্তিতি খারাপ দেখে দিরাই থানা পুলিশ কে খবর দেন। খবর পেয়ে দিরাই থানার এসআই সজিব দত্ত ও এস আই রাজেশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনা স্থলে যায়। এসময় খবর পেয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ঘটনা স্থলে উপস্থিত হন। এর কিছুক্ষন পর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি উজ্জলের নেতৃত্বে তার বাহিনীর লোকজন জুলহাসের পক্ষ হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ছবি তুলতে গেলে অতর্কিত হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সাবেক কাউন্সিলর সবুজ মিয়া জানান কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই অতর্কিত ভাবে উজ্জল মিয়া ১০-১২ জন লোক নিয়ে সাংবাদিকের উপর হামলা চালায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আবু হানিফ চৌধুরীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী জানান, মারামারির খবর পেয়ে আমি সংবাদ সংগ্রহের কাজে ঘটনাস্থলে যাই,এসময় উজ্জল বাহিনীর তান্ডবের ছবি তুলতে গেলে কোন কিছু বুঝার আগেই দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সাধারন সাবেক মেয়র চন্ডিপুর গ্রামের মোশাররফ মিয়ার ছেলে উজ্জল ও আছাব উদ্দিনসহ কয়েকজন পুলিশের সামনেই আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিরাই সার্কেল আবু সুফিয়ান জানান, বাসার ভেতর হামলার খবর পেয়ে পুলিশের ইমার্জেন্সি ফোর্স পাঠানো হয়। বাহিরে হামলার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্ঠা চলছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এস আই সজিব দত্ত বলছেন, আমি বাসার ভেতরে ছিলাম, গেইটের সামনে ঘটনা ঘটেছে। ৭ নং ওয়ার্ড কউন্সির লিটন রায় জানান, পুলিশের উপস্তিতিতে উভয়পক্ষকে নিভৃত করার চেষ্টা করছি, এসময় বহিরাগতদের বাড়াবাড়িতেই সাংবাদিকের উপর হামলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী দিলারা খাতুন জানান, আমার ভাই সোহেল সরদার বাসায় মিটার লাগাতে গেলে, জুলহাস মামা ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমের চেষ্ঠা চালায় এসময় আবস্থা খারাপ দেখে পুলিশে খর দেই, পুলিশ ঘটনার স্থলে আসে, এরপর জুলহাসের মামা শশুর চন্ডিপুররের আছাব উদ্দিন মিয়া উজ্জলকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে, তারা ঘটনাস্থলে এসেই সাংবাদিক ও আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালায়। তবে জুলহাস মিয়া বলছেন, আবু হানিফ জোর করে মিটার লাগানোর চেষ্ঠা করে, তার উপর কে হামলা করেছে আমি জানি না, আবু হানিফ ঘটনােেক ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্ঠা করছেন বলে তিনি দাবী করছেন। অভিযুক্ত উজ্জলের ০১৭১২৩২৬০১৭ নাম্বারে বার বার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
দিরাই থানার ওসি আজিজুর রহমান বলছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে,হামলাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।