নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ– হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্মিত
‘জগদল’ ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে শনিবার।
বেলা ২ টায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
জেলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে হাওরপাড়ের দুটি উপজেলা দিরাই ও জগন্নাথপুর। দিরাইয়ের পুর্বাঞ্চল ও জগন্নাথপুরের পশ্চিমাঞ্চলের ৪ টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক জনবসতি অধ্যুষিত এলাকাটি। স্বাধীনতারপর থেকে এলাকার বাসিন্দারা নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত। চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিত এলাকাবাসীর দুর্দশা লাগব করতে ও মানুষের স্বস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০০৬ সালে ‘জগদল’ ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটির
নির্মান কাজ শুরু হয়। জগদল গ্রামের কৃতিসন্তান কুমিল্লা জেলার তৎকালিন জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নির্মিত হাসপাতালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন বিএনপি-
জামায়াত জোট সরকারের হুইপ ফজলুল হক আসপিয়া। সরকার পরিবর্তনের কারণে অর্ধযুগ পর ২০১৩ সালে শেষ হয় নির্মান কাজ। ঐ বছর ২৩ অক্টোবর মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাছের আলীকে নিয়ে এই হাসপাতালের উদ্বোধন করেছিলেন । কিন্তু পরবর্তীতে নির্মিত হাসপাতালটি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যার ফলে দিরাই পূর্বাঞ্চলের লাখো মানুষ এখনো স্বাস্থ্য বঞ্চিত। অদৃশ্য কারনে অদ্যাবদি হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু না হওয়ায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেন হাসপাতাল নির্মাণের নেপথ্যের মানুষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান। হাসপাতালটির স্বাস্থ্য সেবা চালু করতে তিনি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের শরণাপন্ন হন। পরিকল্পনা মন্ত্রী বিষয়টির উপর বিশেষ নজর দেন। দুর্গম হাওরের মানুষের
দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা সংশ্লিষ্টদের
স্মরণ করিয়ে হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম চালুর নির্দেশনা দেন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে
২০ ফেব্রুয়ারি এই হাসপাতালটির স্বা¯’্য সেবা উদ্বোধন করতে যা”েছন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান
এমপি। এটি চালু হলে দিরাই ও জগন্নাথপুর উপজেলার বৃহদাঞ্চলের লাখো মানুষের স্বা¯’্যসেবার পথ খুলে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে এমনটাই এলাকাবাসীর দাবি।এলাকাবাসী জানান, হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষ আনন্দিত। নতুন আশায় বুক বাঁধছে স্বা¯’্যসেবা বঞ্চিত হাওরবাসী। জগদল বাজারের ব্যবসায়ী নজির মিয়া বলেন, সাধারণ গরিব অসহায় মানুষের জন্য হাসপাতালটি চালু হওয়ার খবরে এলাকায় আনন্দের বন্যা
বইছে। আমাদের চারটি ইউনিয়নের গরিব মানুষের খুবই উপকার হবে। এলাকার প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা
নুনু মিয়া বলেন, আমরা এলাকাবাসী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ তিনি
অজোপাড়াগাঁয়ে সরকারি খরচে নির্মিত গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের স্বা¯’সেবার উদ্বোধন করতে
আসছেন। সরকার এত টাকা খরচ করে হাসপাতালটি তৈরি করলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে
দীর্ঘদিন চালু হয়নি। এতে ক্ষতি হচ্ছে হাওরের গরিব মানুষের। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি
জালালাবাদকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে হাওরের মানুষের উপকার হয় এমন কাজ করার জন্য। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটি অযত্নে পড়ে আছে। সেবা কার্যক্রম চালু হচ্ছে না। এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে এই বিষয়টি বলার পর আমি হাওরের দুর্গম এলাকার এই হাসপাতালটিতে সেবা কার্যক্রম চালু করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি। আমরা সবাই মিলে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।