নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গেল দুই সপ্তাহ থেকে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় এলএসডি (লাম্পিং স্কিন ডিজিজ) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে উপজেলার প্রায় সবকটি গ্রামের গবাদি পশু। এতে মারা গেছে প্রায় ২০টির মতো গরু। গরু মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় বেশ করেকজন জনপ্রতিনিধি।
তবে আক্রান্ত হবার খবর পশু হাসপাতালে থাকলেও মৃত্যুর খবর জানা নেই তাদের। এ নিয়ে রীতিমতো লুকোচুরি করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তপন কান্তি পাল গরু মরার খবর তার কাছে নেই জানিয়েছে বলেন, ‘ লাম্পিং স্কিন ডিজিজ এই ভাইরাসে আমাদের উপজেলায় কোন গরু মারা যায়নি। ’
বিভিন্ন গ্রাম থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে প্রতিদিনই দুই তিন করে গুরু মারা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কে দিনরাত পার করছেন গরুর মালিকরা। আর পশু হাসপাতালের সেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এদিকে বারবার পশু হাসপাতালে গিয়েও পশু ডাক্তারের দেখা পাচ্ছেন না ভোক্তভোগি মালিকরা। আর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মচারী নাম প্রকাশের অনিচ্ছশর্তে জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরু আক্রান্তের খবর নিয়ে আসছেন। তাদের প্রয়োজনী পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে। আর এ ভাইরাসের ঔষুধও নেই।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ভাইরাসে গবাদি পশুর দুই পায়ের মধ্যখানে সিনায় ফোস্কা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে সেখানে পানি জমে গরুগুলো মারা যায়। তখন অবিরত লালা ঝরে। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কায় পানি জমে একসময় নিস্তেজ হয়ে মারা যায় গবাদি পশুগুলো। নতুন এই রোগ নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন।
উপজেলার শাল্লা ইউনিয়নের চব্বিশা গ্রামের ছাদিকুর রহমান, ইয়ারাবাদ গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, মনোয়ার আলফাজ উদ্দীন, সহদেব পাশা গ্রামের মামুনুর রহমান (আইনজীবী) তাদের নিজেদের এলাকায় গরু মরার খবর নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে ৪নং শাল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী ফুল মিয়া বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস এ নিয়ে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই আমার ইউনিয়নের গরুর মালিকরা এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।’
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘গত অক্টোবরে প্রথমবারের মতো আমাদের সুনামগঞ্জে এলএসডি ভাইরাস রোগ দেখা দেয়। মূলত ভারত থেকে যেসব গরু দেশে আসছে, তা থেকেই ছড়িয়েছে এই রোগ। আমাদের দেশে এই রোগ অতীতে ছিল না। এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। হাওরাঞ্চলে এই রোগে গরু মারা গেছে কি না তা আমাদের রেকর্ডে নেই। তা ছাড়া ক্ষুরারোগেও গরু মারা যেতে পারে।’