ডেক্স নিউজ-
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) জাতীয় ডাটা সেন্টারে রক্ষিত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভান্ডার সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় ‘বিজিডি ই-জিওভি সিআইআরটি এর সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প, সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরিগঞ্জ-হবিগঞ্জ মহাসড়কের ‘শাল্লা-জলসুখা’ সড়কাংশ নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ১২টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ ৩হাজার ৪৭০কোটি ২০লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩হাজার ১৬৩কোটি ৫০লাখ এবং অবশিষ্ট ৩০৬কোটি ৭০লাখ টাকা বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে।
মঙ্গলবার (২০আগষ্ট) রাজধানীর শেরে-বাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ. মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে বলেন, জাতীয় ডাটা সেন্টারে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি রয়েছে। প্রতিদিনই তথ্যের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো রয়েছে। এগুলোকে সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়া জরুরী। এজন্য আমরা বিজিডি ই-জিওভি সিআইআরটি এর সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পটি অনুমোদন করেছি।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৪৬কোটি টাকা। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) জুলাই ২০১৯ থেকে জুন ২০২৪ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন সন্তোষজনক উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ১.৮৪ শতাংশ। টাকার অংকে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩হাজার ৯৫১কোটি। গত বছর একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ০.৫৭ শতাংশ। ওইসময়ে ব্যয় হয়ে ছিল ১হাজার ২৭কোটি টাকা।
তিনি আরো বলেন, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে না গিয়ে প্রকল্পের টাকা সরাসরি প্রকল্প পরিচালকের কাছে দেয়ার যে বিধান করা হয়েছিল তার সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। এ কারণে গতবছরের জুলাই মাসের তুলনায় এবছরের জুলাইয়ে এডিপি বাস্তবায়ন প্রায় তিনগুন বেশি হয়েছে। একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে-জিএনএস করস এর নেটওয়ার্ক পরিধি সম্প্রসারণ এবং টাইডাল স্টেশন আধুনিকীকরণ। যার খরচ ধরা হয়েছে ১১৪কোটি ৮৯লাখ টাকা। থানচি-রিমকীর-মদক-লিকরি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫৩কোটি টাকা। সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসুখা-আজমিরিগঞ্জ-হবিগঞ্জ মহাসড়কের শাল্লা-জলসুখা সড়কাংশ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬৯কোটি টাকা। রাঙ্গামটি সড়ক বিভাগের অধীন পাহাড় ভুমি ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের বিভিন্ন চেইনেজে ড্রেনসহ স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৯কোটি ২৬ লাখ টাকা।
এছাড়া খুলনা কর ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১কোটি ৭৬লাখ টাকা। মধুমতি-নবগঙ্গা উপ-প্রকল্প পুনর্বাসন ও নবগঙ্গা নদী পুন:খনন ড্রেজিংয়ে মাধ্যমে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৩কোটি ৬১লাখ টাকা। মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে ভোলা জেলার চরফ্যাশন পৌর শহর সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৭কোটি ৯৮লাখ টাকা। বাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি হতে ধরাভাঙ্গা এমপি বাঁধ পর্যন্ত মেঘনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১ কোটি টাকা। ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে নাটোর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৫কোটি ৫৮লাখ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদফতর জোরদারকরণ প্রকল্পের ব্যয় হবে ১৬০কোটি টাকা। উপকূলীয় জনগোষ্ঠির বিশেষত নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লবণাক্ততা মোকাবেলায় অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৬কোটি ৮৭লাখ টাকা।