মরমী সাধক দেওয়ান হাসন রাজার ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী আজ ২১ ডিসেম্বর। লোভ লালসার বাইরে থেকে সহজ সরল জীবন যাপনের এই রাজা আধ্যাত্মিক জীবনের সাধনায় রচনা করে গেছেন অসংখ্য লোকগান। মরমী এই সাধকের জন্ম-মৃত্যুতে বরাবরই খুব একটা আয়োজন থাকে না সুনামগঞ্জে। তবে এবছর জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী একসঙ্গে পালন করবে জেলা শিল্পকলা একাডেমী ও হাসনরাজা ট্রাষ্ট।
হাওর-বাওড় ও মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশের জেলা সুনামগঞ্জ ‘হাসন রাজার দেশ’ হিসেবেই পরিচিত। ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের লক্ষণশ্রীর ধনাঢ্য জমিদার পরিবারে জন্ম নেওয়া মরমী সাধক হাসন রাজা জীবদ্দশায় প্রায় ২শ গান রচনা করেছেন। ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। হাসন রাজার গানে সহজ সরল স্বাভাবিক ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী যেমন উচ্চারিত হয়েছিল তেমনি আধ্যাত্মিক কবিও ছিলেন তিনি। সকল ধর্মের বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটি ও মানুষের গান। তাই তিনি এখনো বেঁচে আছেন সুনামগঞ্জের মাটি ও মানুষের মাঝে। তার স্মৃতি ধরে রাখা হাসনরাজা মিউজিয়ামে অনেকেই আসেন দুর দুরান্ত থেকে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনে হিবার্ট বক্তৃতায় হাসন রাজার দুটি গানের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু প্রখ্যাত এই মরমী সাধকের জীবন-দর্শন ও গানের চর্চা এখন আর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হয় না বললেই চলে। হাওর-বাওর ও মেঘালয় পাহাড়ের পাদ দেশের জেলা সুনামগঞ্জ ‘হাসন রাজার দেশ’ হিসাবেই পরিচিত। কিন্তু মরমী এই সাধকের জীবন ও দর্শন কিংবা তার গানের চর্চা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখানে হয় না বললেই চলে।
হাসনরাজাকে নিয়ে চর্চা করার সুযোগ করে দেয়ার দাবি করেন সাংস্কৃতিককর্মী ফারিন। তিনি বলেন,হাসনরাজা ছিলেন একজন জমিদার। উনি একজন জমিদা হয়েও সাধারন জীবনযাপন করেছেন। সাধারন মানুষের জন্য গান লিখেছেন। কিন্তু এখনো হাসনরাজার গান নিয়ে সুনামগঞ্জে তেমন কোন চর্চা হচ্ছে না। ফলে হাসনরাজা সর্ম্পকে আমাদের বর্তমান যুগে অনেকেই অনেক কথা জানে না। মরমী সাধকদের জীবন দর্শন নিয়ে গবেষনা করার সুযোগ করার দাবি জানান সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব অনিশ তালুকদার বাপ্পু। তিনি বলেন,মরমী সাদকের রাজধানি সুনামগঞ্জ। কিন্তু দুঃখের বিষয়। মরমী কবিদেও সৃষ্টিকর্ম জীবনদর্শন নিয়ে গবেষনা করার সুযোগ সুনামগঞ্জে নেই। আগামি প্রজন্ম মরমী কবিদের নিয়ে জানার জন্য গবেষনা ও চর্চার ব্যবস্থা করা দরকার।
হাসনরাজা ট্রাষ্টের উদ্যোগে জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজনের কথা জানালেন হাসনরাজা জন্মবার্ষিকী উদযাপন পরিষ এর আহবায়ক দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী। তিনি বলেন আমরা জন্ম ও মৃত্য দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা,হাসনরাজার ছবি আকাঁ প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।
হাসনরাজাসহ মরমী সাদকদের জীবন দর্শন নিয়ে আলোচনা ও সংস্কৃতিক অনুষ্টানের কথা জানালেন জেলা প্রশাসক। মাহাম্মদ আব্দুল আহাদ। তিনি বলে,হাসনরাজাসহ সুনামগঞ্জের মরমী সাদকদেও জীবনদর্শন নিয়ে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা শিল্পকলার উদ্যোগে ২১ ডিসেম্বর শিল্পকলা একাডেমীতে এ অনুষ্টান অনুষ্টিত হবে।