সংবাদটি পড়া হয়েছে: ১,৮৭২
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সুনামগঞ্জের শাল্লায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে গত ৫ ও ৯ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্মারকে পিআইসি’র সভাপতিদের অনুকূলে কার্যাদেশ প্রদান করা হলেও এখনো শুরু হয়নি অধিকাংশ বাঁধের কাজ। আবার যেসব বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে, সেগুলোও চলছে দায়সাড়া ভাবে। এনিয়ে উপজেলার প্রকৃত কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারী সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল ছায়ার হাওর উপ-প্রকল্পের অধিন নেত্রকোনা জেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রাম হ’তে কল্যাণপুর বাজার পর্যন্ত মোট ৯টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১২৬ ও ১২৭ নং পিআইসি দু’টিতে যথারীতি কাজ শুরু হলেও বাকি ৭টিতে এখনো কাজ শুরু হয়নি। তবে ওই ইউনিয়নের ১৩২নং পিআইসি’র কাজের কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানান এলাকার কৃষকগণ। স্থানীয় কৃষকগণ জানান, তারা জন্মলগ্ন থেকে কোনোদিনই ওই স্থান তলিয়ে হাওরের ফসল ডুবতে দেখেননি। এব্যাপারে ১৩২নং পিআইসি’র সভাপতি বেরীকান্দা গ্রামের সোহেল মিয়ার মুঠোফোনে কথা হলে তিনিও অকপটে স্বীকার করে বলেন, স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ সত্যি। আমার বাঁধ এলাকা বর্ষায়ও ডুবে না। সরকার আমাকে কাজ দিয়েছে, তাই কাজ করবো। বাঁধটির প্রয়োজন আছে কিনা সেটা সরকার দেখবে।
তাছাড়া উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের কালিকোটা হাওর উপ-প্রকল্পের ২৯টি পিআইসি গঠন করে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ওই হাওরের অধিকাংশ পিআইসি’তে এখনো পর্যন্ত কাজ শুরই হয়নি। আবার যেসব পিআইসি’তে কাজ শুরু হয়েছে, তার অধিকাংশ পিআইসি’তে সাইনবোর্ডও দেখা যায়নি।
অপর দিকে ভান্ডাবিল হাওর উপ-প্রকল্পের ২০নং পিআইসি’র বাঁধটি অপ্রয়োজনীয় বলে দাবি করেন এলাকাবাসি। তারা জানান ওই বাঁধটি গত বছর যেভাবে করা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই আছে। গত শ্রাবণ মাসে বাঁধটুকু তলিয়ে ছিল। এ বাঁধে কোনো কাজই নাই। তাছাড়া তারা আরো বলেন, চৈত্র-বৈশাখের অকাল বন্যায় এ বাঁধটি ভাঙ্গার সম্ভাবনা নাই। এব্যাপারে ২০নং পিআইসির সদস্য সচিব সানন্দ দাসকে বাঁধে পেয়ে কথা হলে তিনিও কৃষকদের কথা স্বীকার করে বলেন, বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে এ বাঁধে পানি উঠে না এবং এটা ভেঙ্গে হাওরের ফসল তলিয়ে যাবার কোনো ভয় নাই বলেও জানান তিনি। আপনি এ কাজটি কি ভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের সাবেক চেয়ারম্যান সুবল চন্দ্র দাসের মাধ্যমে পেয়েছি। আমরা কিছুই জানি না। চেয়ারম্যান সুবল চন্দ্র দাস ওই কাজে জড়িত আছেন কিনা প্রশ্ন করলে তিনি হেঁসে বলেন চেয়ারম্যান শুধু এ বাঁধ নয়, অনেকগুলো বাঁধে শরিক আছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কাবিটা স্কীম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা সুবল চন্দ্র দাসের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি পরে দেখা করবেন বলে ফোনটি কেটে দেন।
এবিষয়ে সুনামগঞ্জ পওর-১ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলা কাবিটা স্কীম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটি আমাদেরকে রির্পোট করেছেন, হাওরের পানি দেরীতে নামায় বাঁধের কাজ শুরু করতে দেরী হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি শাল্লার হাওর এলাকা আজ পরির্দশন করেছি এবং পিআইসি’র লোকজনদের সাথে কথা বলেছি। দু’একদিনের মধ্যে সবকটি পিআইসিতে শুরু করা হবে বলেও জানান।