বানিয়াচং প্রতিনিধি ঃ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হাওরে কৃষি কাজে পুরুষের পাশাপাশি শ্রম দিচ্ছেন নারীরা। পুরুশ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা ধানের চারা তোলা,চারা রোপন ও নিড়ানির কাজ করে থাকেন। নারী শ্রমিকদের কাজে কৃষকগন যেমন সন্তুষ্ট হচ্ছেন তেমনি নারী শ্রমিকরাও উপরি টাকা রোজগার করে সংসারের দারিদ্র্যতা দূর করে সকলের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছেন। অনেককাল আগে থেকেই নারীরা হাওরে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। এতে কোন সময় কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। হাওরে বোরো মেীসুমের শুরু থেকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত কৃষিশ্রমের কাজ থাকে। তারপর বর্ষাকালে মূলত কোন কাজ থাকে না। হাওরে কৃষিশ্রমে বিশেষ করে বোরো মৌসুমের শুরুতে শ্রমিক সংকট হয় না মূলত নারীরা শ্রম দেওয়ার কারনে।
হাওরে নারী শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা সংসারের সবকাজ শেষ করে ঘর থেকে বের হন। সারাদিন হাওরে শ্রম দিয়ে দিনশেষে আবার টাকা নিয়ে ঘরে ফিরে রান্না ও সংসারের যাবতীয় কাজ করছেন। এত কোন সমস্যা হচ্ছেনা।
সরেজমিনে বানিয়াচংয়ের হারুনী বোরো হাওরে কথা হয় মহিলা শ্রমিকদের সাথে।
এসময় বোরো ধানের চারা তোলার কাজ করছিলেন জল্পনা দাশ(৪২),পাতলক্ষী দাশ(৭০),দয়াময়ী দাশ(৪৫),নমিতা দাশ(৩৮),সাধবী দাশ(৫০),রাধারানী দাশ(৮০)। তারা সবাই এসেছেন পাশ^বর্তী গ্রাম থেকে।
রাধারানী দাশ(৮০) এর সাথে আলাপকালে জানান,এই বয়সে কাজ করে খেতে হয়। কারন আমরা গরীব মানুষ। ছেলের সংসারে থাকি কিছু উপরি উপার্জন করে দিতে পারলে ছেলে ও ছেলের বউ খুবই খুশি হয়।
জল্পনা দাশ(৪২) জানান, খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে রান্ন করে স্বামী সন্তানদেরকে ভাত খাওয়াইয়া তারপর হাওরে কাজ করতে এসেছেন।
সকাল নয়টা থেকে কাজ করে বিকাল ৩টায় বাড়িত যাব। মুজুরী দুই থেকে আড়াইশ টাকা।
পাতলক্ষী দাশ(৭০) জানান,একটা বয়¯ক ভাতার কার্ড থাকলে হয়তোবা হাওরে কাজ করা লাগত না।
সাধবী দাশ(৫০)জানান, আমরা অনেক বছর যাবৎ হাওরে কাজ করতে আসি। আমাদের কাজ করতে কোন সমস্যা হয় না।
এব্যাপারে কৃষক সুন্দর আলী জানান, মহিলা দিয়ে কাজ করালে শান্তি পাওয়া যায়। মহিলারা ফাকিঝুকি কম করেন। তারা সময়মতো কাজে আসেন এবং সময়মতো কাজ শেষ করেন। তাদেরকে পুরুষ শ্রমিক থেকে বেতন কিছু কম দিলেও সমস্যা হয়না।