বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে ৯৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি বিশেষ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন লাভ করেছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এই প্রকল্পে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার ১২টি উপজেলার কিছু নির্বাচিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫তলা বিশিষ্ট ভবন করা হবে। যাতে বর্ষা মওসুমেও একসঙ্গে পাঠদান ও আবাসিক ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষাপ্রকৌশল অধিদপ্তর এই প্রকল্প বাস্তবায়নে থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘হাওর এলাকার নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন’ শীর্ষক এই প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে চলতি বছরই জমা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলার হাওর এলাকার ১২টি উপজেলায় নির্বাচিত কিছু বিদ্যালয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
হাওর এলাকায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যেই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার ১২টি উপজেলায় ৪০টি ছাত্রাবাস ও ১২টি ছাত্রীনিবাসও নির্মাণ হবে। পাঁচতলা ভবনের প্রতিটা ছাত্রাবাসের আসন সংখ্যা হবে ১০০টি। এছাড়াও ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য চারটি ছয়তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন, ২৭টি পাঁচতলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন ও ৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫২টি হোস্টেল নির্মিত হবে। ৫২টি হোস্টেলে ৩০ হাজার বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র থাকবে। বর্ষা ও হেমন্তে পাঠদানের পাশাপাশি মনোরম পরিবেশে আবাসনের ব্যবস্থাও ভোগ করতে পারবে শিক্ষার্র্থীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, বাংলাদেশে গড় শিক্ষার হার ৭১ শতাংশ। তবে হাওরাঞ্চলে এই হার গিয়ে ২০-৪০ শতাংশ। হাওরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাল দশার জন্য শিক্ষার হারও নিম্নমুখী। অনুন্নত অবকাঠামোর কারণে বর্ষায় শিক্ষার্থীরা সহজে স্কুলে যেতে পারেনা। যার ফলে বেশিরভাগ সময়ই তারা অনুপস্থিত থাকে। তাই নিয়মিত পাঠদানের বিরতির কারণে পিছিয়ে পড়ে তারা। এতে অনেকে ঝরেও যায়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্যই হাওরজুড়ে পাঁচতলা বিশিষ্ট শিক্ষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন করতে চায় সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, ধর্মপাশা, জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ দিরাই,-শাল্লাসহ,কয়েক উপজেলার কিছু বিদ্যালয় এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যেই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় চলতি বছরই প্রকল্প জমা দিয়েছিল। মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদন লাভ করেছে। সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার কিছু নির্বাচিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় এই প্রকল্পভুক্ত হিসেবে সুবিধা লাভ করবে। এতে হাওরাঞ্চলে শিক্ষার হার বাড়বে এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে। আগামীতে হাওরের সবগুলো বিদ্যালয়ই এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হবে বলে জানান তিনি।