বিপ্লব রায়:
শাল্লা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান। তিনি একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কর্মস্থলে ২০ মাস না থেকেও বেতন নিচ্ছেন নিয়মিত। শুধু মাত্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরিছন্নতা কর্মী ও আয়া নিয়োগের নির্ধারিত তারিখ ঘোষণা হলে ঢাকা থেকে শাল্লা উপজেলায় আসেন। নিয়োগ দিয়েই আবার ঢাকায় চলে যান। এই কর্মকর্তার বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে অবগত থাকলেও কার্যকরী ভূমিকা নিতে না পেরে কর্মকর্তারা বিব্রতবোধ হচ্ছেন। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একাধিকবার এই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন করমকর্তাদের কাছে লেখালেখি করেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
ফলে জেলা প্রশাসককে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে ২০ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। ১৭ই মার্চ কর্মস্থলে থাকলেও এরপর থেকেই উপজেলা থেকে উধাও। উনার রাজনৈতিক হাত লম্বা থাকায় কাউকে কোনো পরোয়া করেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একাধিকবার রেজুলেশনের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবরে সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এর কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা এখনো গ্রহন করা হয়নি। এদিকে শাল্লা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজিজুর রহমান ২০১৮ সালে যোগদান করার পরপরই মাসে ২/৪ দিন উপস্থিত থাকেন। তবে গত ১৭ই মার্চ থেকে ২০ মাস ধরে অনুপস্থিত। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার এই অনুপস্থির কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীদের সরকারি অংশের বেতন-ভাতা প্রাপ্তির লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নথিপত্র পাঠানো, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ পর্যবেক্ষণ করা, শিক্ষাভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প তদারকি, উপবৃত্তি প্রদানসহ নানা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তাঁর কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। অফিসের অন্যান্যরা উপস্থিত থাকলেও উনাকে দেখা যায়নি।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, আমি একটু বাহিরে আছি। দুয়েকদিন পর অফিস করব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আজিজুর রহমানকে নিয়ে আমরা বিব্রত হচ্ছি। মন্ত্রনালয়ে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শাল্লার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।