দিরাইয়ে একই জায়গায় বিএনপির দুই গ্রুপের সমাবেশ ১৪৪ ধারা জারি

 

দিরাই প্রতিনিধি ঃ- সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পাশাপাশি জায়গায় এক গ্রপ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভোলা,মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে নেতাকর্মী হত্যার প্রতিবাদ,জালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ আরেক গ্রুপ সাবেক সভাপতি আব্দুস শহিদ চৌধুরীর শোকসভা ও মিলাদ মাহফিলের ডাক দেয়। এনিয়ে গত দুই দিন ধরে দিরাই বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঝে মারমুখী অবস্থান পরিলক্ষিত হয়। বুধবার সকাল দশটায় দিরাই কলেজ রোডস্থ বাগানবাড়ি কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও সংঘাত মোকাবেলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে সকাল থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।দুপক্ষের সংঘর্ষে জালমালের ক্ষতির সম্ভাবনা বিরাজমান থাকায় দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহমুদুর রহমান মামুন বাগানবাড়ি কমিউনিটি সেন্টার ও আশপাশের এলাকায় সকল প্রকার সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারির আদেশ করেন। বিষটি নিশ্চিত দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম জানান,সকাল দশটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত নির্ধারিত এলাকায় জনগনের জানমালের নিরাপত্তা সার্থে এ আদেশ বহাল থাকবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দিরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আব্দুস শহিদ চৌধুরীর স্মরণে শোক সভা করতে তার ছেলে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির উপদেষ্টা তাহির রায়হান চৌধুরী দেশে এসে দিরাই’র দুই জায়গায় দুটি সমাবেশ করার ঘোষণা করেন। বুধবারের শোক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ খবরটি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক আহবায়ক দিরাই শাল্লা আসনের সাবেক এমপি নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অনুসারীরা জানতে পেরে বিক্ষোব্দ হয়ে উঠে। নাছির উদ্দীন চৌধুরীর অসুস্থ্যতার সুযোগে বিএনপির উপজেলা কমিটিকে পাশ কাটিয়ে তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল দলের ভিতর বিভক্তি সৃষ্টি করে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার পায়তারা করছেন এমন অভিযোগে তারা শোক সভায় নজরুল ইসলাম খানসহ অন্যান্ন নেতাদের দিরাই সফর বাতিলের জন্য চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে দিরাই উপজেলার নেতারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও নজরুল ইসলাম খানসহ নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি অবগত করেন। অপর দিকে তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল তার প্রয়াত পিতার শোক সভা বাস্তবায়নের জন্য সকল পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করেন। বুধবারের শোকসভায় নজরুল ইসলাম খানসহ নেতাদের আগমন ঠেকাতে দিরাই উপজেলা বিএনপি প্রতিরোধের ডাক দেয়। আগের দিন উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে দিরাই উপজেলা সদরে ও শ্যামারচর বাজারে প্রায় দুই শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে শোকসভা স্থল বাগানবাড়ি কমিউনিটি সেন্টারের সামনের রাস্তায় একই সময়ে আরেকটি প্রতিবাদ সভার ডাক দেয়। একই সময়ে একই জায়গায় দুই গ্রুপের শোকসভা ও সমাবেশ ঘিরে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে সংঘর্ষসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশংকা বিরাজ করে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল পৌনে দশটার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুর রহমান মামুন বাগানবাড়ির আশ পাশ এলাকায় সকাল দশ টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত সকল প্রকা সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করেন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) দিরাইয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারির বিষয়ে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে দায়ী করছেন। দিরাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্থানীয় বিএনপিকে পাশ কাটিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দিরাই আসতে পারেন না। আমরা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেলা বিএনপির সভাপতি-সম্পাদককে অবহিত করেছি। আমাদের বাদ দিয়ে বিএনপির কোনো অনুষ্ঠান দিরাই’র ভিতরে কাউকে করতে দেওয়া হবে না,যে কোনো মূল্যে দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ প্রতিহত করার ঘোষণা আমরা আগেই দিয়ে ছিলাম।
অপর দিকে শোক সভার আয়োজক যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেল বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আমার পিতা দিরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আব্দুস শহীদ চৌধুরী স্মরণে শোকসভাতে । স্থানীয় বিএনপির সকলকে দাওয়াত দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সরকারি দলের ও পুলিশ বাহিনীর সাথে আতাত করে আজকের শোকসভায় ১৪৪ ধারা জারি করিয়েছে।দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম দৈনিক দিরাই শাল্লা ডটকমকে বলেন, বিএনপি একই জায়গায় একই সময়ে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করায় আইন শৃঙ্খলা অবনতির আশংকা বিরাজ থাকায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে বাগানবাড়ী কমিউনিটি সেন্টার এলাকায় ১৪৫ ধারা জারি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।