গত আগস্ট মাসে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সুনামগঞ্জবাসীর বিকল্প যোগাযোগের লক্ষ্যে ৭৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বহুল কাক্সিক্ষত এই প্রকল্পটি গত সপ্তাহে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একনেক বিভাগ কার্যক্রম শুরুর প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে। ফলে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করবে সড়ক বিভাগ। এছাড়াও সড়কটিতে সেতু, কালভার্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে চূড়ান্ত নকশা করার উদ্যোগও শুরু হয়েছে। এই অর্থ বছরেই নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।
সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ মহাসড়কটি মদনপুর-দিরাই-শাল্লা সড়কাংশ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এই প্রকল্পের কাজ ২০১৩ সনে শুরুর পর বরাদ্দ না থাকায় বন্ধ আছে। তবে নতুন করে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে এবং অনুমোদনও লাভ করেছে। তবে সিলেট বিভাগের সড়কাংশ নামের এই প্রকল্পটি ছোট হওয়ায় শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে পাঠানো হয়। একনেক সভায় গত আগস্ট মাসে অনুমোদন লাভ করে প্রকল্পটি। একনেকে অনুমোদনের পর গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ। এখন প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়ায় পুরোদমে কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, ১৫ কি.মি. দৈর্ঘ্যরে এই সড়কটি মহাসড়ক প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রকল্প। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বিকল্প ও সড়ক যোগাযোগের জন্য এটি বাস্তবায়ন হবে। যাতে সহজে সুনামগঞ্জ জেলার মানুষ রাজধানীতে পৌঁছতে পারে। জানা গেছে, এই সড়কটির প্রস্থ হবে ২৪ মিটার। এর মধ্যে পাকা হবে ১৮ মিটার। সড়কে হবিগঞ্জ অংশে প্রায় ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি বৃহৎ সেতু থাকবে। এছাড়াও আরো ছোট ৩টি সেতু এবং ২৬টি কালভার্ট থাকবে। সেতু ও কালভার্টের নকশা করা হচ্ছে এখন। এছাড়া একনেকে প্রশাসনিক অনুমোদনের পর জমি অধিগ্রহণের জন্য সার্ভেয়ারকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক বছর আগে প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আগ্রহে হবিগঞ্জে মহাসমাবেশে শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাছাড়া সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও কাজটি কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন। পরে তার স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তা এমপি পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করায় গত আগস্ট মাসে একনেক সভায় এটি অনুমোদন লাভ করে।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে আমরা এই সড়কটির প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছি। এখন ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে। একই সঙ্গে কালভার্ট ও সেতুর নকশার কাজও চলবে। তিনি বলেন, এই অর্থ বছরেই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।