বিপ্লব রায় : কিশোরগঞ্জের ধনপুর তেমুখী থেকে শাল্লা উপজেলার চব্বিশা কবর স্থান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দাঁড়াইন নদী খননের নামে জলে গেল কোটি কোটি টাকা। নীতিমালা অনুযায়ী খনন না করেই নেওয়া হয়েছে বিল। খনন করা এলাকায় কিছু কিছু স্থানে এখনো হাঁটুপানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে নদী খনন না করেই এই প্রকল্পের প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিল তুলে বাটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কাগজে, কলমে কাজ শুরু দেখানো হলেও মাঠপর্যায়ে কোনো খনন হয়নি বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। নদী খনন না হলেও এরই মধ্যে ৫৮ কোটি ৬ লাখ টাকার মধ্যে ৫০ কোটি টাকার বিল সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওডিটিএল ড্রেজার লিমিডেটকে পরিশোধ করা হয়েছে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, ওডিটিএল ড্রেজার লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানটি খনন কাজ পেলেও প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা,কর্মচারী বা প্রকৌশলী প্রকল্প এলাকায় একদিনের জন্যও যাননি।
শাল্লা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, যে উদ্দেশ্যে নদী খনন করা হয়েছে তা এখন কোনো কাজেই আসছে না। নদী খননের নামে হরিরলুট করেছে ঠিকাদার ও পাউবো’র কর্মকর্তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, ধনপুর তেমুখী থেকে শাল্লা উপজেলার চব্বিশা কবরস্থান পর্যন্ত দাঁড়াইন নদী খননের কোনো চিহ্ন নেই। এমনকি নৌকা চলাচল পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
শাল্লা উপজেলা যুবলীগ নেতা হুমায়ুন আহমেদ বলেন, নদী কাটা তো দূরের কথা, শুধু দু’পাড় কেটেই নদী খনন করা হয়েছে। ফলে নদীর মধ্যে কোনো খনন কাজ না করায় নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদার ও পাউবো কর্মকর্তারা দাঁড়াইন নদী খননের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েছে।
এ ব্যাপারে শাল্লা পাউবো’র সহকারি উপ-প্রকৌশলী সমসের আলী মন্টু বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভালভাবে কাজ না করায় তাদের ৮ কোটি টাকার বিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী (পওর ০২) শফিকুল ইসলাম বলেন, মাঠপর্যায়ে সার্ভে করা লাগবে। দেখতে হবে নদী ভরাট হয়েছে কি না? বিল দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে বিধায় বিল দেয়া হয়েছে বলে ফোন কেটে দেন।