বরাম হাওর : ঝুঁকির মুখে ফসলরক্ষা বাঁধ

শাল্লা প্রতিনিধি  ::
দিরাই-শাল্লা উপজেলায় অবস্থিত বরাম হাওর। অন্যান্য হাওরের তুলনায় এটি একটু বেশি গভীর। যেকারণে দারাইন নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কৃষকরা। কারণ নদী খনন না হওয়ায় দারাইন নদী অনেকটা মরে যাচ্ছে। এই হাওরে দু’টি উপজেলার বাসিন্দাদের রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর বোরো জমি। শাল্লা উপজেলার নওয়াগাঁও গ্রামের অদূরেই রয়েছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বেশক’টি বাঁধ। বরাম হাওর উপ-প্রকল্পের ১৪ নং পিআইসির বাঁধের অবস্থা ভয়াবহ। ওই বাঁধের পশ্চিম দিকের গোড়ায় বড় আকারের ধস নেমেছে। এ বিষয়ে পিআইসির সভাপতি প্রাণেশ দাস নিজেই বলছেন বাঁধটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। বৃষ্টি হলেই বাঁধের মাটি ধসে ভেঙে যাবে। তিনি বলেন, এই জায়গাটি গভীর হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা বলেছেন ওইদিকে আর মাটি না ফেলার জন্য। টেকসই বাঁধ তৈরি না করলে বরাম হাওরের এই বাঁধ পানির ধাক্কা ছাড়াই বৃষ্টিতেই ভেঙে যাবে বলে মন্তব্য করছেন খোদ পিআইসি’র লোকজনই। তারা জানান, ফসলরক্ষা তো পরের ব্যাপার, এই বাঁধই টিকিয়ে রাখা দায়। বাঁধটিই হুমকির মুখে রয়েছে। তবে তারা এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে অবগত করেছেন বলে জানান। তাদের হাতে থাকা খাতায়ও দেখা যায় তদারকি কমিটির লোকজন বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। এই বাঁধের ১৯৮ মিটারে বরাদ্দের পরিমাণ ১৬ লাখেরও বেশি টাকা।
পাশের বাঁধ পাঠা খাউরি ১৫নং প্রকল্প বাঁধের নিচেও ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে পিআইসি’র সভাপতি গুনেন্দু প্রসাদ দাস বলেন- পুরোনো বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল। আমি বাঁধটিকে টেকসই বাঁধ তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। তার প্রকল্পে বরাদ্দ ১৭ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ১২নং প্রকল্পের সভাপতি অসীম চক্রবর্তী বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কাটছেন। পাশাপাশি তিনি নওয়াগাঁও গ্রামের স্লুইসগেটের গোড়া থেকে মাটি কেটে এক বিশাল গর্ত তৈরি করেছেন। যা স্লুইসগেটের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে পাউবোর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমরা ১৪ নং পিআইসিকে মাটি না ফেলার কোনো নির্দেশনা দেইনি। আর আপনি একটু ১২নং পিআইসির সভাপতিকে বলে দিন স্লুইসগেটের গোড়াটা ভরে দিতে।
এদিকে, ১৩, ৩৯ ও ৩৮নং পিআইসিসহ আশপাশের বেশকিছু বাঁধের কাজ অর্ধেকও হয়নি। নীতিমালা অমান্য করে দায়সারাভাবে কাজ করছে অনেকই। আবার এমনও বাঁধ দেখা গেছে মাত্র কাজ শুরু করলেও, বর্তমানে বন্ধ রয়েছে কাজ। বাঁধে পাওয়া যায়নি সাইনবোর্ডও।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করছি আমরা।