শাল্লায় মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ

নিজস্ব প্রতিবেদক::

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ১নং আটগাঁও ইউনিয়নের কথিত চোরাপল্লী ও চিকাডুবি, বল্লভপুর, নতুনপাড়া এই তিন গ্রামের ৩৩টি মাদক ব্যবসায়ী পরিবারের লোকজন মাদক বিক্রি করবেনা বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে আত্মসমর্পণ করেছে। এসময় তারা হাত উঁচিয়ে প্রতিজ্ঞা করে বলে ‘আমরা আর মদ বিক্রি করবো না, নিজেরা ও খাবো না’।
বুধবার (৩১ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে তারা স্বউদ্যোগে আত্মসমর্পণ করে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মুক্তাদির হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. দিপু রঞ্জন দাস, শাল্লা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম আজাদসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আত্মসমর্পণ কালে বল্লভপুর গ্রামের মাদক বিক্রেতা সুরুজ আলী বলেন, আমরা আর কোনোদিন মাদক বিক্রি করবো না, আমরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছি। আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের কাজটা অত্যন্ত খারাপ। ইহা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতি।
চিকাডুবি গ্রামের মাদক বিক্রেতা লাল মিয়া বলেন, আমরা মাদক বিক্রয়ের সাথে জড়িত ছিলাম। এর জন্য আমরা সমাজের চোখে শত্রু ছিলাম। দীর্ঘদিন পর এটা আমরা বুঝতে পেরে আজ আমরা প্রতিজ্ঞা করলাম যে, এমন জঘন্যতম কাজ আর কোনদিন করবো না।
এব্যাপারে আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম আজাদ বলেন, দীর্ঘদিন পর তাদের মধ্যে এ অপরাধবোধ জাগ্রত হওয়ায় ও তারা নিজ উদ্যোগে মাদকে বিরুদ্ধে প্রতিজ্ঞা করায় আজ থেকে তারা সমাজে স্থান পাবে। আশা করি কেউ তাদেরকে আর অবজ্ঞার চোখে দেখবে না। আমরাও তাদের তাদেরকে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
মাদক ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ কালে উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও তোমরা ভাল পথে ফিরে আসার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার পক্ষ থেকে তোমাদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। তিনি আত্মসমর্পণকারীদের সন্তানদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানান।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল মুক্তাদির হোসেন আটগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবৃুল কাশেম আজাদ, শাল্লা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম ও উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা তাদেরকে ভাল পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করায় আজ তারা তাদের অপরাধ বুঝতে পেরেছে। তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।