দিরাইয়ে ২ দিনে ৩ লাশ ইকবালের মৃত্যু রহস্যজনক!

 

নিজস্ব প্রতিবেদক – ঃ- সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে দুই দিনে তিন জনের লাশ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি সামাজিক, পারিবারিক অস্থিরতা নাকি আইন শৃঙ্খলার অবনতি এনিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। দুই দিনের ব্যবধানে এক মটর সাইকেল চালকের ভাসামন লাশ উদ্ধার, গলায় ফাঁস দিয়ে যুবক ও বিষপান করে যুবতীর আত্মহত্যার পৃথক খবর এগুলো । মটর সাইকেল চালক ইকবাল হোসেন (৩৬) দিরাই পৌরসভার দাউদ পুর এলাকার ছটাই উল্লার ছেলে। গলায় ফাঁস দিয়ে ফজলুর রহমান (২৮) নামে যুবক আত্মহত্যা করেছে। সে চরনারচর ইউনিয়নের পশ্চিম দৌলতপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে। আর বিষপানে মনোয়ারা বেগম (১৭) নামে আরেক যুবতীর আত্মহত্যা করেছে। সে দিরাই সরমঙ্গল ইউনিয়নের নাচনী চন্ডিপুর গ্রামের আব্দুল হাই এর মেয়ে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পৃথক তিনটি মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটা ঘটে।বৃহস্পতিবার রাতেই ইকবালের লাশ উদ্ধার ও মনোয়ারা বেগমের আত্মহত্যার বিষয়ে থানায় পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
ইকবালের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে থানা পুলিশ।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের দত্তগ্রাম ও মধুরাপুরের মধ্যবর্তী লাউরানজানী ব্রীজের পাশে সোমা নদীতে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। একই দিন সরমঙ্গল ইউনিয়নের নাচনী চন্ডিপুর গ্রামের মনোয়ারা বেগম পরিবারের লোকদের অগোচরে বিষপান করে,স্বজনরা তাকে দিরাই উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দিকে শুক্রবার জুমার নামাজের পর পরিবারের লোকদেরকে ঘুমানোর কথা বলে নিজ বসত ঘরের দরজা আটকিয়ে গলাশ ফাঁস দিয়ে দৌলতপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে ফজলুর রহমান আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় সোমা নদী থেকে ইকবাল হোসেনের ভাসমান লাশ রাত আটটায় দিরাই হাসপাতাল থেকে মনোয়ারার লাশ সুরতহাল রিপোর্টের পর ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করে দিরাই থানা পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার পর ফজলুর রহমানের আত্মহত্যার খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
থানা পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকাল দুই টার পরে ইকবাল হোসেন ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলটি নিয়ে বাড়ি থেকে বাহির হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরিবারের লোকেরা পুলিশকে জানায় প্রায়ই দুই তিন দিন সে বাড়ির বাহির থাকতো। এটা মনে করেই তার খোঁজ করেনি।পরদিন তার বড় ভাই একবার খোঁজ নিতে মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তারা আর তেমন খোঁজ নেয়নি। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নদীতে একটি ভাসমান লাশ দেখতে পেয়ে দিরাই থানার পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে দিরাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করেন। পরে লাশের সাথে থাকা মানিব্যাগ তল্লাসী করে ইকবাল হোসেনের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। ভাটিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম চৌধুরী মিফতাহ বলেন, নদীতে একটি ভাসমান লাশের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি আনুমানিক ১০০ মিটার দূরে নাম্বার বিহীন একটি মটরসাইেকল দাঁড়ানো আছে। পরে আমি বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করি।
দিরাই থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন ইকবাল হোসেনের ভাসমান লাশের খবর পেয়ে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে মানিব্যাগে থাকা জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে তার পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করেছে পুলিশ। সন্ধ্যা বেলা মনোয়ারা বেগম নামে আরেক যুবতী বিষপানে আত্মহত্যার খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। দুটি ঘটনায় দিরাই থানায় পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় ফজলুর রহমানের আত্মহত্যার খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ওসি সাইফুল আলম রাত দশটায় এ প্রতিবেদকে জানান মটর সাইকেল চালক ইকবাল হোসেনের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করতে কাজ করে যাচ্ছে থানা পুলিশ।