শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলার ঘটনায় ৯৫ জন আসামী জেল হাজতে

শাল্লা প্রতিনিধিঃ
শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় প্রধান আসামি স্বাধীন মেম্বারসহ ৯৫ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ আদালতে শাল্লা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুর রহিমের আদালতে আসামিরা জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আসামিরা অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। আদালত মঙ্গলবার ৯৫ জন আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

এদিকে আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঝুমন দাসের পরিবার। ঝুমন দাসের মা নিভা রানী দাস বলেন, আমাদের আদালতের প্রতি বিশ্বাস ছিল। আজ শুনতে পেলাম যারা অপরাধ করেছে তাদেরকেই আদালত জেলে পাঠিয়েছেন। এরপরও আমাদের অনেকসময় আতঙ্কেই থাকতে হয়। কারন সেই নির্মমতার দৃশ্য এখনো চোখে ভেঁসে উঠে। এরপরও আমাদের দাবী প্রকৃত অপরাধীরা যেন আইনের বেড়াজাল থেকে ছাড় না পেয়ে কঠিন শাস্তি ভোগ করে।

হামলার সময় ঘর ছাড়া এক নারী রঞ্জনা চৌধুরী জানান, হামলার পর থেকেই আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। ছেলে মেয়ে নিয়ে দুর্দশায় দিন কাটাতে হচ্ছে। এমন অভাব অনটনে থাকার পরও আজকে খুশির খবর শুনে কিছুটা আনন্দিত লাগছে নিজেকে। ৯৫ জন আসামীকে জেলে পাঠিয়ে প্রমান হল অপরাধীরা আইনের উর্ধে নয়।
এই বিষয়ে ঝুমন দাস বলেন, জানতে পারলাম আদালত ৯৫ জন আসামীকে জেলে পাঠিয়েছে। বিষয়টি শুনে আমার পরিবার এবং আমি সন্তোষজনক। এরপরও আমি নিজে কিছুটা আতঙ্কিত অবস্থায় থাকতে হয়। কখন কি হয় বলা যায় না। তবে প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। কারন প্রশাসন আমার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানাচ্ছি।

উল্লেখ্যঃ ফেসবুকে দেওয়া পোস্টকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮টি হিন্দুবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

এ ঘটনায় ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় থানায় পৃথক দুইটি মামলা করা হয়। নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে একটি মামলা করেন হবিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। অন্য মামলাটি করেন শাল্লা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম।