সুনামগঞ্জে ডুবছে শহর ও গ্রাম,বাড়ছে দুর্ভোগ

 

 

স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে বাড়ছে পানি, ডুবছে শহর ও গ্রাম। ক্রমেই বেড়ে চলছে মানুষের দুর্ভোগ। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক লক্ষাধিক পরিবার। প্রবল বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলের কারনে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাযায়, সুরমার পানি ষোলঘর পয়েন্ট দুপুর ১২টার দিকে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার এবং পাহাড়ি নদী যাদুকাটার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি উপজেলা। সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া, আরপিন নগর, বড়পাড়া, কাজির পয়েন্ট ষোলঘর, ওয়েজখালি, মল্লিকপুর, পশ্চিম হাজীপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকা হাটুর সমান পানি। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। হাটবাজারগুলোতে কোমড় সমান পানি। জয়নগর বাজারের প্রায় প্রতিটি দোকানে পানি ঢুকেছে। উপজেলার কাঁচা সড়ক ডুবে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গ্রাম থেকে গ্রামে। সাচনা বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, রামনগর, শরিফপুর, হরিপুর, সুজাতপুর, রাঙ্গামাটি, রাধানগর,ব্রাম্মনগাঁ, শুকদেবপুরসহ বেশকটি গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। গরু-বাছুর মালমালসহ আশ্রয় নিচ্ছে আত্বীয় স্বজনের বাড়ি ও গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে । জামালগঞ্জ উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করছে। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় নিচু এলাকার গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। শিমুলবাক ইউনিয়নের সর্দারপুর, ধনপুর, আমরিয়াসহ প্রায় ১৩ টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শিমুলবাক গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ঘুর্নিঝড়ের কবলে পড়ে ভেঙ্গে গেছে। তবে এখনো কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার খবর পাওয়া যায়নি। দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরসহ গ্রামগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলার পরিষদ সংলগ্ন বেশকটি বাড়ি ও দোকান কোটা সুরমার ভাঙ্গনে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দিরাই উপজেলার কালনী নদীতে ঘুর্নিঝড়ের কবলে পড়ে যাত্রীবাহী একটি নৌকা ডুবে দুই জনের প্রানহানী ঘটে। এদিকে ধর্মপাশার শুকাইর রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে ৩০ টি বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দেন। এভাবেই প্রতিটি উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে গ্রামের পর গ্রাম। জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ দেব জানান, জামালগঞ্জের সবকটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ আছে বেহেলী ও ফেনারবাক ইউপি। বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাস্তাঘাট। এ পর্যন্ত ২৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমীন নাহার রুমা জানান, উপজেরার ৯ টি ইউনিয়নের মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর,গৌরারং,সুরমা ও রঙ্গারচড় ইউপিতে। অন্যান্য ইউপিতে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা সবগুলো সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো আশ্রয়কেন্দ্র করার জন্য নির্দেশ দেয়া আছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য বলা হয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজন হলে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্র খোলার জন্য। বন্যা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।