শাল্লায় তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে শতাধিক ঘর

শাল্লা প্রতিনিধিঃ
অসহায় ও দারিদ্রতার মাঝে কাটছে প্রতিটি পরিবার। দেনা ও সুদী নিয়ে চলে তাদের সংসার। এমন দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে সংগ্রামী জীবন চালাচ্ছেন হাওরপাড়ের মানুষ। ভিটে মাটি না থাকায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অল্প টাকার ভাড়ার ঝুপড়ি ঘরেই কাটছে জীবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী সরকারের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ঘরের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন উপজেলার ১৫৮১টি পরিবার। আর এমন খুশির খবরে নতুন জীবন পান তাঁরা। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রতিটি বাড়িতে পৌছে যায় নির্মাণ কাজের মালামাল। আর এসব মালামাল যাওয়ার প্রেক্ষিতেই এই অসহায় পরিবারগুলো মহাজনদের কাছ থেকে টাকা সুদী নিয়ে খাঁস জমিতে মাটি ভরাট করেন। এমনকি মালামাল নিতেও ৭/৮ হাজার টাকা খরচ করেন তাঁরা। স্বপ্ননীড়ের স্বপ্ন দেখার আগেই বাতিল হয়ে যাচ্ছে তালিকার শতাধিক পরিবার। গত ৫ ফেব্রুয়ারী সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ৯উপজেলার ইউএনওসহ মোট ২০জন ম্যাজিট্রেট নিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের তদন্তে আসেন। এসময় তিনি কাজের কিছু এলোমেলো দেখতে পান। পরে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন প্রায় ২শ ঘরের নাম তালিকা থেকে বাতিল করার জন্য। আর এসব খবর ছড়িয়ে পড়ে তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীদের মাঝে। তাই বাতিল হওয়া সকল সুবিধাভোগীরা মিলিত হয়ে ইউএনও অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন এসে এই বিক্ষোভে অংশ গ্রহণ করে। এসময় তারা জানান, সুদী করে টাকা এনে মাটি ভরাট করেছি। এছাড়াও মালামাল নিতে ৭/৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমাদেরকে ঘরের তালিকা থেকে বাতিল করে দিচ্ছে। তাহলে আমাদের এই খরচ হওয়া টাকাগুলো কে দিবে? দিনাতিপাত করে সংসার চালাচ্ছি এর মাঝে আমাদের উপর এমন অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে কেন? প্রয়োজনে জীবন দিবে, তবুও মালামাল ফেরত দিবে না বলে সুবিধাভোগীরা জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন বিক্ষোভকারীদের সামনে এসে আশ্বস্থ করে তাদেরকে ঘরের তালিকা থেকে বাতিল না হওয়ার জন্য ডিসি মহোদয়ের কাছে সুপারিশ করবেন।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন বলেন, সরজমিনে তদন্ত করে দেখেছি অনেক ঘরের ভিটায় নতুন মাটি। তাই এসব মাটিতে ঘর দেয়া হলে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া জায়গা সংক্রান্ত কোনো বিরোধ থাকলে সেগুলো বাতিল করা হবে। তাই সবকিছু বিবেচনা করা সরজমিন তদন্তে গিয়ে বাতিল হওয়া ঘরের তালিকা করা হবে।