জসিম উদ্দিন, সুনামগঞ্জ :
দেশ জুড়ে আলোচনা পেঁয়াজের দাম এত বাড়ছে কেন? অপরদিকে দাম কমানোর আশ্বাস, বেশী দরে বিক্রি করলে অভিযান। কোন কিছুই দাম কমাতে পারছে না। বরং পেঁয়াজ এখন ডাবল সেঞ্চুরি করেছে। সুনামগঞ্জে প্রতিটি হাটবাজারে পেঁয়াজের এত দাম শুনে ক্রেতারা হতাশ হয়ে পড়ছেন। ৭ কেজি চাল কিনতে যে টাকা লাগে ১ কেজি পেঁয়াজ কিনতেও সেই টাকা লাগে। হাওরাঞ্চলের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এখন পড়েছেন মহাবিপদে।
শুক্রবার স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকা দরে। অথচ নি¤œ আয়ের মানুষের খাবারের মোটা চাল প্রতিকেজি ২৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ১ কেজি পেঁয়াজের দামে চাল মিলছে ৭ কেজি। শহরের খুচরা সবজি বাজারে ঘুরে এমন চিত্র মিলেছে। ফলে দামের ঝাঁজে অস্থির হয়ে উঠেছে ক্রেতা সাধারণ। গত দুই মাস যাবৎ সুনামগঞ্জের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আড়তদাররা ইচ্ছেমতো পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করছে। ফলে পেঁয়াজের মূল্য কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। দাম বাড়ার বিষয়ে আড়তদাররা জানান, আমরা চড়া দামে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকি। ফলে ক্রেতাদের কাছে কম দামে বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। শহরের পুরাতন জেল রোড, কাঁচাবাজার, মধ্যবাজার, উকিলপাড়া, ষোলঘর, পুরাতন বাসট্যান্ড রোড, মল্লিকপুর, ওয়েজখালি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ধরণের পেঁয়াজই ২০০/২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। গ্রামীণ হাটবাজারে একই অবস্থা।
শহরের মধ্য বাজার এলাকার গৃহীনি শিউলি আক্তারের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, স্বামী সারাদিন কাজ করে যে আয় করেন তা দিয়ে সংসার চলেনা। নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা। পেঁয়াজের যে দাম চাল কিনব, না পেঁয়াজ কিনব টেনশনে আছি। কারণ হাতে যে টাকা আছে তা দিয়ে পেঁয়াজ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। মাসুক মিয়া জানান, বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের ২০০ টাকা কেজি শুনে হিমশিম খেয়ে বাসায় ফিরে আসি। এভাবে দাম থাকলে পেঁয়াজ না খেয়ে কেমনে থাকবো। বাবুল মিয়া বলেন, আমি সীমিত আয়ের মানুষ। এত দামে পেঁয়াজ কেনা আমার পক্ষে সম্ভব না। তাই বেশি করে না কিনে কম কিনে নিয়ে আসছি। গৃহীনি তরকারিতে পেঁয়াজ কম দিয়ে রান্না করছেন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ এর কেজি প্রতি যে দাম সেই দামে আমি ৭ কেজি চাল কিনতে পারি। এরকম দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লে সীমিত আয়ের মানুষেরা পেঁয়াজ ছাড়াই স্বাদহীন তরকারি খাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে নজরদারি শুরু হয়েছে। আশা করি দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।