শান্ত কুমার তালুকদার-
গত ২০আগষ্ট একনেকের সভায় অনুমোদন হয়েছে সুনামগঞ্জ-মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-জলসূখা-হবিগঞ্জ মহাসড়কের শাল্লা-জলসূখা সড়কাংশ। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৭শ’ ৬৯কোটি টাকা। এলাকাবাসির বহুল প্রতিক্ষিত সড়কটি নির্মাণ করা হলে পালটে যাবে এলাকার দৃশ্যপট। সংযোগ হবে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ এদু’টি জেলার। সুনামগঞ্জ থেকে সড়ক পথে ঢাকার দূরত্ব কমে আসবে ৭০কিলোমিটার। সময় বাঁচবে প্রায় ২ঘন্টা।
সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শাল্লা-জলসূখা সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৬.৮ কিলোমিটার। এরমধ্যে কালীন নদীর উপর ৮শ ৮৮মিটার ও জলসুখা নদীর উপর ৪শ ৪৪মিটার দৈর্ঘ্য দু’টি ব্রীজ, ছোট ছোট ৩টি ব্রীজ এবং ৫০টি কালভার্ট রয়েছে এ সড়কের মধ্যে।
প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্বপ্নের শাল্লা-জলসূখা-হবিগঞ্জ সড়কের অনুমোদন হওয়ায় দুর্গম শাল্লা উপজেলাবাসির মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। এলাকাবাসি এ সড়কটির দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। এলাকাবাসির স্বপ্ন সড়কটি নির্মিত হলে জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা শাল্লায় শিল্পায়ন ও নগরায়নের সম্ভাবনার দ্বার খুলবে। গড়ে উঠবে শিল্প-কারখানা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পরিবর্তন আসবে এ দূর্গম অঞ্চলের যোগাযোগ, শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য, চিকিৎসাসহ সর্বক্ষেত্রে।
সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জ জেলার লোকজন অতি সহজে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। সেইসাথে এ এলাকার ঢাকার সাথে দূরত্ব কমবে প্রায় ৭০কিলোমিটার এবং সময় বাঁচবে প্রায় ২ঘন্টা। তিনি আরো বলেন, সড়কটি একনেকে অনুমোদন হয়েছে। এখন গেজেট ও সরকারি আদেশের অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করি এ অর্থবছরেই জমি অধিগ্রহণসহ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে।
শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বকুল আহমেদ তালুকদার বলেন, সড়কটির কাজ বাস্তবায়িত হলে এ প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলের উৎপাদিত পন্য ধান ও মাছ সহজে রাজধানী শহরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা যাবে। ফলে কৃষক এবং জেলেরা তাদের উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল পাবে।
৪নং শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী বলেন, সড়কটি নির্মিত হলে হাওরেও শহরের ছোঁয়া লাগবে। যোগাযোগ বঞ্ছিত শাল্লাবাসির কষ্ট দূর হবে। পাশাপাশি এলাকায় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে এবং কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে, বেকারত্বও কমবে।
এব্যাপারে শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, সড়কটি নির্মিত হলে আমার নেতা প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। এটি শাল্লাবাসির জন্য অত্যন্ত সুখবর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শাল্লাবাসির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সড়কটি শাল্লা উপজেলাকে ডিজিটাল উপজেলায় রূপান্তরের একটি মাইলফলক হিসেবে থাকবে। সড়কটি নির্মিত হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগসহ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পাবে এবং এলাকাবাসির জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে।