সুনামগঞ্জে শষ্য আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

জসিম উদ্দিন( সুনামগঞ্জ থেকে)ঃ
আব্দুর রহমান পেশায় একজন কৃষক।তার বাড়ি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের সালামপুর গ্রামে।তিনি এবার তিন কেদার জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন।ফলনও  হয়েছে আশানুরূপ।বার বার বোরো ফসলের হানি এবং ধানের মূল্য কমে যাওয়ায় তার মাথায় আসে বিকল্প চিন্তা।তার সাথে দেখা হলে তিনি বলেন,প্রতি কেদারে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং এ থেকে ২৪/২৫ মন সূর্যমুখী বীজ উৎপাদন করতে পারবেন তিনি।এর দামও অনেক বেশি। হিসাব করে দেখিয়েছেন  তিন কেদার জমি থেকে ৪০/৫০ হাজার টকা আয় করতে পারবেন।তিনি এও বলছেন যে সূর্যমুখী থেকে উৎপাদিত তেল ডায়াবেটিস, হৃদরোগের জন্য খুবই উপকারি।
আব্দুর রহমানের এই সূর্যমুখী ফুলের বাগান নতুন করে আকর্ষন করছে পর্যটকদের।তার এই বাগানের সুন্দর্যের কথা ছড়িয়ে পড়েছে জেলা ব্যাপি। প্রতিদিন তার এই বাগান দেখতে নতুন নতুন পর্যটক ভীড় করছেন।এমনকি বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে  তিনিও বাগান পরিদর্শন করে হাওর অঞ্চলের কৃষকদের সূর্যমুখী সহ রবি শষ্য চাষে পরামর্শ দেন।
জেলায় শুধু সূর্যমুখী নয় ভূট্টা, সরিষা আবাদও করেছেন কৃষক।কৃষকরা জানান শষ্য আবাদে খরচ কম এবং লাভ বেশি।বন্যার ঝুঁকিও নেই।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চিনাকান্দি গ্রামের কৃষক রফিক মিয়া জানান,এক কেদার জমিতে ভূট্টা আবাদে খরচ হয় মাত্র দুই হাজার টাকা।ভূট্টা উৎপাদন হয় প্রায় ত্রিশ মন। যার বাজার মূল্য ২৪ হাজার টাকা।এই হিসেবে এক কেদার জমিতে ধান পাওয়া যায় ১২/১৪ মন।যার বাজার দর ৬ হাজার টাকা।ভূট্টা আবাদে চার গুন লাভ পাওয়া যায়। তাই তিনি এবার ভূট্টা চাষ করেছেন।
জেলার আরেকটি উপজেলা জামালগঞ্জ এর মান্নান ঘাট এলাকার বেশ কিছু কৃষক সূর্যমুখী ও ভূট্টা চাষ করেছেন।তারা বলছেন সরকার শষ্য আবাদে পর্যাপ্ত পরিমান বীজ, সার বিতরণ করলে কয়েক বছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে কৃষক। সচল হবে হাওরের অর্থনীতির চাকা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ভূট্টা ৪২৭ হেক্টর,সরিষা ২ হাজার হেক্টর,সূর্যমুখী ২৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে এবং ৬ হাজার কৃষকের মাঝে শষ্য আবাদের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সফর উদ্দিন বলেন, কৃষক এখন ধানের বিকল্প হিসেবে রবি শষ্য চাষে ঝুঁকছে।আমাদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত পরিমান বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে এবং কৃষদের রবি শষ্য চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।আমার বিশ্বাস আগামীতে হাওরের কৃষকের বৃহৎ একটি অংশ শষ্য আবাদে এগিয়ে আসবেন।