বৃষ্টি পড়তেই শাল্লায়  একাধিক বাঁধে ফাটল! দুশ্চিন্তায় কৃষককূল

 

 

পি সি দাশ, শাল্লাঃ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় ছোট-বড় সব হাওরেই এখন পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। হাওরপাড়ে ধান কাটা নিয়ে সবাই এখন ব্যস্ত। কিন্তু বোরো ফসল রক্ষা বাঁধগুলোতে নজরদারি খুবই কম। এরই মধ্যে বৃষ্টিতে একাধিক বাঁধে ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে।

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় গত এক মাস ধরে হাওরের বাঁধে নজরদারি কমেছে বলে জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা। কয়েকদিন ধরে নিয়মিত বৃষ্টি এবং আবহাওয়া অফিসের আগাম বন্যার আশঙ্কার পরও বাঁধে নজরদারি বাড়ানো হয়নি বলে অভিযোগ কৃষকদের।

উপজেলার হাওরের কয়েকটি বাঁধের কাজের মান খুবই খারাপ হয়েছে। এ কারণে বৃষ্টিতে এরই মধ্যে বাঁধে ছোট ছোট ফাটল ধরেছে বলে জানিয়েছেন বাঁধের পাশের লোকজন। অনেক বাঁধের ফিনিশিং ও কলমী লাগানো হয়নি। সংশ্লিষ্টদের খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিতে বার বার বলা হচ্ছে। বরাম হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের মধ্যে রয়েছে পাটাকাউরি বাঁধ। ভান্ডা বিল হাওরের বিলপুরের নিকটের বাঁধ, নওয়াগাঁওয়ের পাশের বাঁধ, ছায়ার হাওরের ডুমরা গ্রামের পশ্চিম পাশের ২টি বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সফর উদ্দিন জানান, চলতি বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জ জেলায় বোরো জমি চাষাবাদ হয়েছে দুই লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর। এর মধ্যে হাওরে চাষাবাদ হয়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ১০৫ হেক্টর। বাকিটুকু চাষাবাদ হয়েছে উঁচু জমিতে। শনিবার পর্যন্ত হাওরে প্রায় ৪৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। হাওরের ধান দ্রুত কাটার জন্য জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে গণবিজ্ঞপ্তি জারি এবং মাইকিং করানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাঁধের মাটির কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে কোনো কোনো বাঁধের ঘাস মরে গিয়েছে। অনেক জায়গায় জিওটেক্সটাইল থাকায় ঘাস লাগানো হয়নি। অতিবৃষ্টিতে যেসব বাঁধের মাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেগুলোতে পিআইসিরা কাজ করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার ও বাঁধের নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাউবোর শাখা কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অফিসের আগাম বন্যার সতর্কতা অনুযায়ী ২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল সুনামগঞ্জ-সিলেট অঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসামে ২০০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার ফলে সুরমা নদীর পানি ৪ থেকে ৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে আগাম বন্যার দেখা দিতে পারে। তাই হাওরের বোরো ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের অনুরোধ করা হচ্ছে।