স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নগরীর বালুচরস্থ এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে শ্রীকান্ত হলের ৩য় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
রাত ১০টায় পুলিশ খবর পেয়ে ছাত্রাবাসে গিয়ে ওই তরুণী ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে। বর্তমানে ধর্ষিতা তরুণী ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাত সাড়ে ৩টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ধর্ষিতা মেয়েটির নামের আদ্যক্ষর ‘আ’। সে সিলেটের ওসমানীনগরের হাতিদূর গ্রামের আদ্যক্ষর”মি” মেয়ে। ধর্ষিতা ওই তরুণীর স্বামী আদ্যক্ষর “ম” নর্থইষ্ট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী।
এদিকে ঘটনার পরপর র্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামিউল আলম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ সোহেল রেজাসহ র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা ঘটন
সুত্র জানান, শুক্রবার ধর্ষিত তরুণী স্বামীকে একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-০২-১৩৬২) যোগে ঘুরতে আসেন সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিট এমসি কলেজে। গাড়ী বাহিরে রেখে দু’জন ক্যাম্পাসে ঘুরাঘুরিতে থাকেন। উঁচু-নিচু আর আঁকাবাকা রাস্তার বিশাল বড় ক্যাম্পাস ঘুরতে গিয়ে কিভাবে দীর্ঘ সময় চলে গেছে তার বুঝতেই পারেননি তারা। রাতেও হয়ে গেছে। তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত ৮টা। একপর্যায়ে ক্যাম্পাসের ভেতর তরুণীকে রেখে তার স্বামী সিগারেট আনতে কলেজের গেইটের বাইরে বের হন। এসময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক তরুণীকে একা পেয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চাইলে সে সজোরে চিৎকার দিলে এগিয়ে আসে তার স্বামী এবং ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। শুরু করে বেধড়ক মারপিট।
একপর্যায়ে ওই তরুণী ও স্বামীকে নিয়ে যায় এমসি কলেজের শ্রীকান্ত ছাত্রাবাসে। সেখানে ৩য় তলার একটি কক্ষে স্বামীকে বেঁধে আটকে রেখে তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা।
খবর পেয়ে পুলিশ ছাত্রাবাসে গিয়ে ওই তরুণী ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শাহপরাণ (রহ.) থানার ওসি কাইয়ুম চৌধুরী জানান, এই দম্পতি কি জন্য এখানে এসেছিলো সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কলেজটির শ্রীকান্ত ছাত্রাবাসের হোস্টেল সুপার ও পলিটিক্যাল সায়েন্সের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জীবন কৃষ্ণ আচার্য্য বলেন, পুলিশ ধর্ষিত তরুণীর বক্তব্যে রেকর্ড করে চিকিৎসার জন্য তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
ছাত্রাবাস বন্ধ অবস্থায় অভিযুক্তরা কিভাবে হোস্টেলে প্রবেশ করলো এমন প্রশ্নের জবাবে হোস্টেল সুপার বলেন, আসলে ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলে টিউশনি করে এমন কিছু ছাত্র আন-অফিসিয়ালি হোস্টেলে রয়ে গেছে। তবে অভিযুক্তরা আমাদের কলেজের ছাত্র কি-না সেটি কালকে যাচাই-বাছাই করে জানাতে পারবো।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার পুলিশ অভিযান শুরু করেছে জানিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ সোহেল রেজা পিপিএম বলেন, এমসি কলেজ গেট থেকে তিন-চারজন যুবক ওই তরুণীকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তার স্বামী বাঁধা দিলে তাকেও মারধর করে তারা। পরে বালুচরস্থ কলেজ হোস্টেলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ওইসব যুবক।